বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুবার্ষিকীতে মিলাদ ও দোয়া

চাঁদপুর: চাঁদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা মরহুম মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুবাষিকীতে চাঁদপুরের বিভিন্ন মসজিদে আলোচনা, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তার ভাই প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলী, পিতা জুলফিকার আলী, মাতা বেগম সৈয়দের নেছা ও ভাই বোনসহ সকল মৃত মুসলমানের রুহের মাগফেরাত কামনায় কোরআন খতম-মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার মাধ্যমে বিশেষ ভাবে দোয়া করা হয়।

বুধবার (১৯ফেব্রুয়ারী) বাদ আছর শহরের বিভিন্ন মসজিদে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী স্মৃতি সংসদ ও পরিবারের পক্ষ থেকে এ মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।

এসব দোয়া অনুষ্ঠানে ধর্মপ্রাণ মুসলমান, মরহুমের পরিবারের লোকজন, আত্মীয় স্বজন, শুভাকাঙ্খি, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী স্মৃতি সংসদের সদস্য, এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

বাদ আছর শহরের চৌধুরী জামে মসজিদ, পশ্চিম নাজির পাড়া আলী রাজা জামে মসজিদ, বকুলতলা রেলওয়ে জিলানীয়া জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়।

চৌধুরী জামে মসজিদের মিলাদ ও দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল হাদি, আলী রাজা জামে মসজিদে মুনাজাত ও দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন আজাদ ও বকুলতলা রেলওয়ে জিলানীয়া জামে মসজিদে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালানা করেন হাফেজ মোহাম্মদ ওবায়েদউল্লাহ।

শহরের চৌধুরী জামে মসজিদের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশা।

তিনি বক্তব্যে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে এ দেশের জন্য জীবন বাজিরেখে দেশমাতৃকার টানে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানকে ভুলা যাবেনা। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এ দেশকে মুক্ত করে আমাদেরকে পরাধিনতার ঘেলানি থেকে রক্ষা করার ভুমিকায় তার সাহসিকতার দৃস্টান্ত দেখিয়ে ছিলেন।

রহিম বাদশা আরো বলেন, যুগে যুগে এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবদানের জন্য আমাদের মাঝে চির অমর হয়ে থাকবেন। তাদের অবদান আমরা কোন দিনভুলবোনা, তা ভুলা যাবে না। এদেশে মুক্তিযুদ্ধ বার বার আসবেনা। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে তাদের অবদান চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা অনেকে দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হতে পারবো, এমনকি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে পারবো কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবোনা। মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী আমাদের চাঁদপুর জেলা তথা এ দেশের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অবদান রেখে সমাজ সভ্যতার জন্য কাজ করে গেছেন। তার অবদান ভুলা যাবেনা। তাইতো তাকে আমরা সব সময় আমাদের স্মৃতির পাতায় স্মরণ করে যাবো।

চাঁদপুর প্রেসক্লাব সমজোতা কমিটির নেতা ও দৈনিক প্রভাতী কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আব্দুল আওয়াল রুবেল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ও হযরত আলী দুজনই ভাল মানুষ ছিলেন। আজও আমরা তাদের স্মরন করি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোহাম্মদ আলী স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। যার ফলে আমরা সবাই আজ স্বাধীনভাবে এদেশে বসবাস করতে পারছি। বাংলা ভায়ায় কথা বলতে পারছি।

কিন্তু তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে একটি স্বাধীন দেশ ও লাল সবুজের পতাকা উপহার দিয়ে গেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। মুক্তিযুদ্ধ এ দেশে বারবার হবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধ করে লাল সবুজ পতাকার স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে তারা সত্যিকার অর্থে ভাগ্যবান ছিলো। তাদের স্বশ্রদ্ধাভরে জাতি ও দেশ স্মরণ করে আসছে।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সারারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শওকত আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী হমায়ুন, স্মৃতিসংসদের অন্যতম সদস্য ও বিএনপি নেতা মুকবুল আহমেদ, প্রান ও এসিআই এর পরিবেশক মোহাম্মদ হাসান আলী সেন্টু, মোহাম্মদ আলী ও হযরত আলীর নাতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হায়াম দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আলী রাজা মসজিদের দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সমজিদ কমিটির উপদেষ্টা আলহাজ্ব মো. সফিউদ্দিন আহমেদ, ড্যাফোডিল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও সমজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোাহাম্মদ নূর খান, আলী রাজার মসজিদ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুসলিম মাস্টার, কোষাধ্যক্ষ মো. শামছুদ্দিন ভুইয়া বুলবুল, মুয়াজ্জিন মো. মনির হোসেন, মো. রাসেল মৃধা, জিলানী মসজিদের ছানী ইমাম মাওলানা ইয়াকুব আলী, মো. ওমর আলী বুলবুল, পালবাজারের ব্যবসায়ীসহ সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। দোয়া শেষে সকলের মাঝে তবারুক বিতরণ করা হয়।
ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম