মতলব উত্তর (চাঁদপুর): চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক হিন্দু সম্প্রদায়ের এক জেলের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও জলাশয়ের মাছ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে ছেংগারচর পৌর ভবন প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করেন মৎস্যচাষী শ্রী লক্ষন চন্দ্র দাস (৪৫) ও তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রী লক্ষন চন্দ্র দাস বলেন, আমি ছেংগারচর পৌরসভার কেশইরকান্দি এলাকায় নূর আলমের বাড়ীতে ভাড়া বাসায় বসবাস করে জেলে পেশায় নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। গত প্রায় ০৯ মাস আগে রুহিতারপাড় জলাশয়ে ৪৮ লাখ টাকা খরচ করে ৫৫০ মণ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করি। মাছ চাষ করার পর গত ৫ আগষ্টের পর থেকে ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর প্রধান আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে সব মাছ ধরে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, এক পর্যায়ে আমি ৩ লাখ টাকা চাঁদা দিতে রাজি হই, এবং লোন করে ২০ আগষ্ট জাহাঙ্গীর প্রধানকে নগদ ২ লাখ টাকা চাঁদা দেই। পরে জাহাঙ্গীর আলম আরো ১ লাখ টাকা দাবি করে, টাকা না দিলে জলাশয়ের সমস্ত মাছ ধরে নিয়ে যাবে বলে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। অবশেষে ৫ ডিসেম্বর এর আগে বিভিন্ন সময়ে আমার জলাশয়ের ৫০ লক্ষাধিক টাকার সমস্ত মাছ জাহাঙ্গীর প্রধান ও তার লোকজন মিলে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয় আমি এ বিষয়ে কথা বলাতে আমাকে এবং আমার পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। এখন আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এ ঘটনায় আমি গত ১৬ ডিসেম্বর মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
লক্ষন চন্দ্র দাসের স্ত্রী মৌমিতা রানী দাস বলেন, আমি ছেলে সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমার স্বামীর কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছে, মাছগুলো ধরে নিছে এবং আমাদেরকে হত্যা করার হুমকি দিছে জাহাঙ্গীর প্রধান।
লক্ষন চন্দ্র দাসের পিতা চিত্ত রঞ্জন দাস বলেন, আমার ছেলে একজন মাছ চাষী। আমরা এই পেশার উপর নির্ভরশীল। এখন আমার ছেলে জলাশয়ের মাছ বাঁচাতে ২ লাখ টাকা চাঁদা দিল। তারপরও মাছ রক্ষা হল না উল্টা আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে জাহাঙ্গীর প্রধান। আমি সরকার ও প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর প্রধান মুঠোফোনে বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রবিউল হক বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীর প্রধানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ফম/এমএমএ/