চাঁদপুর : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব বড়ালী গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ীর মৃত মোহাম্মদ আলী ভুঁইয়ার ছেলে একাধিক মামলা ও মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী জাফর ইকবাল স্বপনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মা, ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা। তার এহেন কর্মকান্ডের কারণে মা তৈয়বেন নেছা বর্তমানে বাড়ি ছাড়া। তৈয়বেন নেছা এখন বাবার বাড়ী ও মেয়ে রোকসানা এবং বিলকিসের বাড়িতে থাকেন। স্বপনের স্ত্রী ও সন্তানদের সহযোগিতার কারণে পুলিশ এসেও তাকে বাড়ী থেকে গ্রেফতার করতে পারেন না।
সরেজমিন ওই বাড়ীতে গিয়ে দেখাগেছে, স্বপন তার পিতার তৈরী করা বাড়ীতে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে থাকেন। পিতার মৃত্যুর পর সে পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে থাকলেও ছোট ভাই বোরহান উদ্দিন বিপ্লবকে কোন ধরণের ঘর তৈরী করতে দিচ্ছেন না। যে কারণে স্ত্রী ও ৪টি সন্তান নিয়ে একটি ভাঙা ঘরে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছেন বিপ্লব। পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে পিতার বড় সন্তান স্বপন দায়িত্বশীল হওয়ার কথা থাকলেও তার কাছে পরিবারের সকল সদস্যরা জিম্মি।
পরিবারের সদস্যদের সাথে এমন আচরণের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য জাফর ইকবাল স্বপনের ঘরে গিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে পাওয়া যায়। তিনি ঘরে উপস্থিত নেই। কারণ হিসেবে জানাগেল-সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামী ও তার বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি এবং একটি মারামারির মামলা থাকায় বাহিরের মানুষ আসার সংবাদ পেলে পালিয়ে যায়।
অভিযুক্ত স্বপনের বোন রোকসানা বেগম লাবলী জানান, আমার ভাইয়ের অত্যাচারে আমরা পুরো পরিবার অতিষ্ঠ। সে অন্যায় ও অপরাধ করে পালিয়ে যায়। এই কাজে তার স্ত্রী ও সন্তানরা সহযোগিতা করে। সে কত জুলুমাবাজ আমার মায়ের কাছ থেকে বাবার পেনশনের বই কেড়ে নিয়েগেছে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পরে মা এখন পেনশন না পেয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছেন। লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারি না। পরে বাড়িতে ছোট হয়ে থাকতে হয়।
স্বপনের ছোট ভাই বোরহান উদ্দিন জানান, দীর্ঘ বছর আমি বড় ভাইয়ের বিভিন্ন নির্যাতন ও যুলুমের শিকার। সে পিতার সম্পত্তি ভাগ করে না দেয়ার কারণে আমি মানবেতর জীবন যাপন করি। আমার মেয়ে বড় হয়েছে, বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আত্মীয় স্বজন বাড়ীতে আনতে পারি না। ভাই একাধিক বিয়ে করেছে। সর্বশেষ যে স্ত্রী বাড়ীতে আছে সে সারাদিন আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। যে কারণে আমি থানায় জিডি করে রেখেছি।
বোরহান আরো জানায়, সর্বশেষ আমার ভাই স্বপন ও তার স্ত্রী আরিফা বেগম এবং তার সন্তানরা ২৭ আগষ্ট বিকেল ৩টার দিকে বাড়ির কাছে কুট্টির দোকানের সামনে আমাকে এবং আমার বোন রোকসানাকে বেধম মারধর করে আহত করে। এই ঘটনায় আমি ২৮ আগষ্ট বিকেলে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি অত্যচারী ভাইয়ের জুলুম ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে চাই। প্রশাসন যেন আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করে।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি। বোরহান উদ্দিন বিপ্লবের অভিযোগটি আমলে নেয়া হয়েছে। স্বপনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে জানতে পেরেছি। আমরা তার পুরনো মামলার ওয়ারেন্ট পেলে দ্রুত গ্রেফতার করার চেষ্টা করব। একই সাথে এই অভিযোগ সঠিকভাবে তদন্ত করার জন্য একজন অফিসারকে দেয়া হবে।
ফম/এমএমএ/