ফরিদগঞ্জে সম্ভাবনার দ্বার খুলছে শখের ছাদ বাগান

চাঁদপুর: দেশে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে নগরায়নের পরিধি ও নতুন নতুন আবাস্থল। যে কারণে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে কৃষি জমি এবং অবাধে কাটা হচ্ছে বৃক্ষ। আর এর ফলে খাদ্য উৎপাদনসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। এরেই মাঝে আশার আলো দেখিয়ে সম্ভাবনার দ্বার খুলছে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা শখের ছাদ বাগান। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাদ বাগান। অনেকেই এখন বাড়ীর ছাদেই শখের ছাদ বাগান গড়ে তুলছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার একাধিক ছাদ বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ীর ছাদেই কেউ কেউ দেশি-বিদেশী  বিভিন্ন জাতের ফল, সবজি ও ফুলের বাগান গড়েছেন। এই ছাদ বাগান থেকেই পরিবারের পুষ্টি চাহিদা যোগান দিচ্ছে এবং বাজারে বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করছেন তারা।

উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনের গাঁও গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম পাটওয়ারী নিজ বাড়ীর ছাদেই দেশী-বিদেশী জাতের বিভিন্ন রকম ফল ও ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন। ইতোমধ্যে বাহারি জাতের ফল গাছে শোভা পাচ্ছে তার ছাদে। এর মধ্যে ভিয়েতনামী ও থাইল্যান্ডী জাম্বুরা, ভিয়েতনামী মাল্টা-৩, চায়না কমলা, দার্জিলিং কমলা,  কিউজাই, পালমার আম, রুপালি আম, ত্বিন ফল, ড্্রাগন ফল, আঙুর, লেবু, পেয়ারা ও সপেদা রয়েছে। এ ছাড়াও সব্জি হিসাবে ঢেঁরস, বরবটি, পুইশাক রয়েছে একই ছাদ বাগানে।

আমিনুল ইসলাম বলেন, একজন কৃষি অফিসার আমার ছাদ বাগান পরিদর্শন করেছেন। সরকারি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ পাই তাহলে বাণিজ্যিকভাবে ছাদ বাগান করব।

একই ইউনিয়নের খাড়ঁখাদিয়া গ্রামের আরেক বাসিন্দা বাকিবিল্লা তপাদার দীর্ঘ দিন যাবত ছাদ বাগান করছেন। কলা, লেবু আঙুরসহ নানা জাতের বাহারি ফুল ও ফলের গাছ রয়েছে তার ছাদ বাগানে। বাকিবিল্লা বলেন, মৌসুমে শাক-সবজি ছাদ বাগানে করেন তা দিয়েই পরিবারের চাহিদা মিটে।

ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা মামুনুর রশিদ ছাদ বাগানেই ফল, ফুল  ও শাক সবজি আবাদ করেন। আম, লেবু ও কমলাসহ নানা জাতের ফল তার ছাদ বাগানে দৃশ্যমান। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি আবাদ করেন এই ছাদ বাগানে। তা দিয়েই প্রায় পরিবারের পূষ্টি চাহিদা পূরণ করেন। বাজার থেকে তেমন শাকসবজি ক্রয় করা লাগে না তার পরিবারের জন্য। বরং নিজেদের চহিদা মিটিয়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদেরকে দেয়া হয়।

পাটওয়ারী বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান নিজের চার তলা ভবনে গড়েছেন বিশাল ছাদ বাগান। ছাদ বাগানে প্রবেশ করলেই মনে হবে যেন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত কোন সবজি ও  ফলের বাগান। প্রায় ৬০ জাতের সবজি ও ফলের গাছ রয়েছে এই বাগানে। তিনি বলেন, এই বাগানে দেশি-বিদেশী আরো ফলের গাছ লাগানো হবে। ইতোমধ্যে তিনি সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, অনেকেই শখ করে ছাদ বাগান করেন। তবে এটা অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যয় বহুল। সরকারিভাবে ছাদ বাগানের উপর কোন প্রকল্প চালু নেই। তবে কেউ যদি ছাদ বাগান করতে আমাদের সহযোগিতা চায় আমরা অবশ্যই করবো। আমাদের প্রত্যেক ইউনিয়নে সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন। তাদের ফোন নম্বর নিয়ে যে কোন সময় সহযোগিতা নিতে পারবেন এবং সরাসরি উপজেলায় এসে আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার সুযোগ রয়েছে।

ফম/এমএমএ/

মো. বারাকাত উল্যাহ | ফোকাস মোহনা.কম