ফরিদগঞ্জে সন্তানকে মৃত দেখিয়ে সম্পত্তি আত্মসাৎ, পিতা শ্রীঘরে

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর): চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে জন্মদাতা পিতা একমাত্র ছেলে ও চার বোনকে মৃত দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ নিয়ে সম্পত্তি নিজ নামে লিখে নেয়ার অভিযোগে পিতার বিরুদ্ধে সন্তান মামলা করেছে। আদালতের নির্দেশে পিতা এখন জেল হাজতে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সন্তান ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।

শনিবার (২০ নভেম্বর) প্রবাসী এমরান হোসেন ঝুটন ওরফে জহির দুপুর বারো টায় ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে আত্মিয়-স্বজনদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমরান হোসেন ঝুটন(৩৮) জানান, তিনি তার পিতা আহাম্মদ উল্যা বেপারী প্রথম স্ত্রী খুরশিদা বেগমের ছেলে। এই ঘরে তার আরেক বোন খাদিজা বেগম লাকি ছিল বর্তমানে সে মৃত। আমার পিতা আমার মায়ের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পরে দ্বিতীয় বিয়ে করে এবং সেই ঘরে সৎ মা এবং তিন বোন রয়েছেন।

জন্মের পর থেকে আমি নানার বাড়ীতে মায়ের সাথে মামাদের আদর স্নেহে বড় হয়েছি। আমার দুঃখিনি মা ও বোনের সাথে আমার পিতার কথাও আমি ভাবতাম। কিন্তু পিতার আদর স্নেহ ভালবাসা এবং তদারকি আমাদের ভাগ্যে জোটেনি। এক সময় জীবিকার টানে প্রবাসে(সৌদি আরব) চলে যাই। যাওয়ার পর থেকে পিতার সার্বক্ষনিক দেখভাল করেছি। আমার সাধ্যানুযায়ী বাবা, সৎ বোনের বিয়ে এবং বাবার চোখের অপারেশরে জন্য টাকা দিয়েছি।

কিন্তু আমার সেই জন্মদাতা বাবা আমাকে এবং আমার বোন লাকি কে মৃত দেখিয়ে গত ০৮.০৮.২০১০ তারিখে আমাদের স্থানীয় ১১নং চরদুঃখিয়া পুর্ব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তৎকালিন চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী ও সচিবের স্বাক্ষরে ওয়ারিশ সনদ গ্রহন করে। ফলে আমি আজ আপনাদের সামনে দাড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেও আমার পিতার কাছে আমি মৃত। জন্মদাতা পিতা হয়ে তিনি কিভাবে শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভে নিজের ঔরসজাত সন্তানকে মৃত দেখালেন?

শুধু তাই নয়, তিনি তার পিতার একমাত্র সন্তান দাবী করে তথা আমার ৫(পাঁচ) ফুফুর অস্তিত্ব অস্বীকার করে গত ২৭.১০.২০১০ তারিখে একই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একই চেয়ারম্যানের নিকট থেকে ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করেন। জাল জালিয়াতির এমন নজির আমি অদ্যাবদি দেখিনি।

আমি প্রবাস থেকে গত দেড় মাস পুর্বে দেশে ফিরে আসার পর আমার ফুফু কর্তৃক আমাকে দান করা ও আরেক ফুফু থেকে ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে বাবার বাঁধার সম্মুখিন হই। এক পর্যায়ে বাধার কারণ জানতে গিয়ে বাবার এসব জালিয়তির বিষয়গুলি লোক মাধ্যমে জানতে পারি। এক পর্যায়ে ভূয়া ওয়ারিশ সনদগুলি সংগ্রহ এবং বর্তমান চেয়ারম্যান কর্তৃক আমি জীবিত এ মর্মে প্রত্যয়ন পত্র নেই। জমি ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।

এলাকায় এই বিষয়ে কয়েকবার আমাদের স্থানীয় ভাবে শালিশী হলেও কোন সুরাহা না হওয়ায় আমি বাধ্য হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) চাঁদপুর আদালতে অভিযোগ করি। পরে আদালতের নির্দেশে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহন করে বৃহষ্পতিবার রাতেই আমার পিতাকে আটক করে । পরদিন শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) পুলিশ তাকে আদালতে পাঠালে আদালত আমার বাবাকে জেল হাজতে প্রেরন করে।

প্রেসক্লাব সভাপতি মো. কামজ্জামান’র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে এসময় এমরান হোসেন ঝুটন, ঝুটনের মা খুরশিদা বেগম, স্ত্রী মুক্তা আক্তার, ফুফাতো বোন সরলা বেগম, ফুফাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম, অন্য ফুফাতো ভাই সেলিম পাটওয়ারী, দেলোয়ার হোসেন এবং এলাকাবাসীর পক্ষে সোহেল ঢালী ও সামছুল আরেফিন মুকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফম/এমএমএ/

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম