ফরিদগঞ্জে গৃহবধূকে অপহরণের পর ধর্ষণ, অভিযুক্ত আটক

অভিযুক্ত হাবিব খান। ছবি: সংগ্রহীত।

চাঁদপুর : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এক গৃহবধূকে কৌশলে অপহণের পর আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হাবিব খানকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাশবর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে চাঁদপুর আদালতে প্রেরন করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।

ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, গৃহবধূকে উদ্ধার করে তার মেডিকেল পরীক্ষা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য চঁদপুরে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় গৃহবধূর পিতা বাদী হয়ে থানায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে ও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের পুর্ব ধানুয়া গ্রামের ওয়ারিশ খান বাড়ির খোরশেদ আলমের ছেলে হাবিব খান বাবু পেশায় অটো বাইক চালক। কিন্তু সে নিজেকে এক সময় একেক পরিচয় দিতো। সে ইতিপুর্বে বেশ কয়েকটি অটোবাইক চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত। নারী লোভী হাবিব সুঠাম দেহের অধিকারী। সে কৌশলে নারীদের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মুঠো ফোনে প্রেমের অভিনয় করে তাদের সাথে অবৈধ সর্ম্পক স্থাপন করতো। একই কথা ধানুয়া এলাকার লোকজনও জানান। এছাড়া পরকিয়ায় জড়িয়ে সে বহু নারীর সংসার ভেঙেছে।

আটক হাবিবের দ্বিতীয় স্ত্রী শামছুন্নাহার বেগম বলেন, তার স্বামী একাধিক বিয়ে করেছে। সে দ্বিতীয়। তার অত্যাচারের কারণে গত ৫ মাস পুর্বে সে বাপের বাড়িতে অবস্থান করছে। ইতিপুর্বে তার স্বামীকে এই পথ থেকে সরানোর জন্য বহু চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোন কিছুই কাজে আসেনি। তিনি নিজে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া, রূপসা, প্রত্যাশী ও শরিয়তপুর জেলা থেকে অবৈধ কর্মে লিপ্ত অবস্থায় আটকের পর অর্থ দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছেন।

ফরিদগঞ্জ থানার মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, সংখ্যালঘূ সম্প্রদায়ের ওই গৃহবধূকে মাস খানেক পুর্ব থেকে অভিযুক্ত হাবিব খান মুঠোফোনে বিরক্ত করে আসছিল। ঐ গৃহবধূ গত ১০ সেপ্টেম্বর ফরিদগঞ্জ উপজেলার শোভান গ্রামে তার পিত্রালয়ে বেড়াতে আসে। তা জানতে পেরে অভিযুক্ত হাবিব খান তার এক সহযোগিকে নিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর ভোরে ওই গৃহবধূর পিত্রালয়ের পাশে ওঁৎপেতে থাকে। ওই গৃহবধূ ভোরে হাটাহাটি করতে ঘর থেকে বের হওয়া মাত্রই তাকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা করে অভিযুক্ত হাবিব খান তার এক সহযোগির সহায়তায় অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ওই গৃহবধূকে পাশ^বর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী এলাকায় একটি ঘরে আটকে রাখে। অভিযুক্ত হাবিব নিজে পুলিশে চাকুরী করে, এঘটনা প্রকাশ করলে ওই গৃহবধূর পিতা-মাতাসহ পরিবারের লোকজনকে মামলায় জড়িয়ে শেষ করে দিবে এমন ভয়-ভীতি দেখিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষন করে।

ঘটনার ৯দিন পর ওই গৃহবধূ কৌশলে বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে পালিয়ে তার পিত্রালয়ে চলে আসে। বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানানোর পরে তার পিতা বাদী হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক হাবিব খানকে পাশ^বর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী এলাকা থেকে আটক করেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদ হোসেন বলেন, ওই গৃহবধূর পিতা বাদী হয়ে নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হাবিব খানকে আটক করা হয়েছে। দুপুরে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে মেডিকেল পরীক্ষা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য চঁদপুরে প্রেরণ করা হয়। এইক সময়ে অভিযুক্ত হাবিবকে চাঁদপুর আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
ফম/এমএমএ/প্রচ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম