ফরিদগঞ্জ : বৃহষ্পতিবার (২১ অক্টোবর ) সকালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পুর্ব ইউনিয়নের কর্মকার বাড়ির হিন্দু সম্প্রদায়ের পুড়ে যাওয়ার বসত ঘর পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান।
এসময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধের মাধ্যমে সেই অসাম্প্রদায়িক দেশ বাংলাদেশ পেয়েছি। তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দেশকে উন্নয়নের পথে ধাবিত করছেন, ঠিক তখনই একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। পুজা সময় একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুকৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আগুন দিয়েছে। আমার নির্বাচনী এলাকা ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পুজার সময় আমার নেতাকর্মীরা টানা ৭২ ঘন্টা রাতদিন সজাগ থেকে পাহারা দিয়েছে। যাতে কোন অপশক্তি আমাদের সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে। কিন্তু দুর্গাপুজার পর গুপ্টি পুর্ব ইউনিয়নের কর্মকার বাড়ির এই ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়া বা পুড়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে সাদা পাঞ্জাবীতে কালো দাগ লাগানোর অপচেষ্টা করেছে বলে আমার ধারনা। আমি ঘটনার সময় ফোনে আগুনের সংবাদ পেয়েছি। আমি আগুনের বর্ণনা যা শুনলাম তাতে এইটুকু বলা যায়, এটি কোন শটসার্কিট থেকে আগুন নয়।
আমি ধন্যবাদ জানাই চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামীলীগ, জেলা পুলিশ এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে সবকিছু দেখে গেছেন। আশা করছি তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ রির্পোট প্রদানের মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করবেন।
এসময় তার সাথে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন, ইউপিচেয়ারম্যান আব্দুল গনি বাবুল পাটওয়ারী, আওয়ামীলীগ নেতা খাজে আহাম্মদ মজুমদার, উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা: পরেশ চন্দ্র পাল, পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হিতেশ শর্মা, সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার দাস, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান শাহীন, যুগ্মআহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন আহমেদ এবং গল্লাক আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ হরিপদ দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার দিনগত রাতে উপজেলার গুপ্টি পুর্ব ইউনিয়নের কর্মকার বাড়ির বিরেশ্বর কর্মকারের ঘরটি আগুনে পুড়ে যায়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মালামাল পুড়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে পরদিন বুধবার (২০অক্টোবর) চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মিলম মাহমুদ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমানসহ জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পুজা পরিষদ এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে জেলা প্রশাসক অগ্নীকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে ইউএনওকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
ফম/এমএমএ/