প্রবারণা পূর্ণিমা: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব

।। এস ডি সুব্রত।। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা  যা আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। প্রবারণা পূর্ণিমা হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই উৎসব পালিত হয় আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে। সকল পূর্ণিমা তিথি বৌদ্ধদের জন্য কোনো না কোনোভাবে শুভদিন।
আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিকে  বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা  শুভদিন মনে করেন। এই দিনটিকে তারা স্মরণ করে তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে থাকেন। প্রবারণা পূর্ণিমা শব্দটি হচ্ছে পালি শব্দ।এই শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে অনুরোধ,মিনতি,বর্ষবাস,ত্যাগ,শিষ্ঠাচার,ক্ষতিপূরন,বিধি,তৃপ্তি,আহ্বান,নিমন্ত্রণ,নিষেধ,ত্যাগ,শেষ,সমাপ্তি,পায়োশ্চিত্ত,ঋণপরিশোধ, ভিক্ষুদের বর্ষবাস পরিসমাপ্তি ইত্যাদি। বর্ষাবাস শেষে বুদ্ধ সকল ভিক্ষুগণ একত্রে হয়ে তাদের ভুলত্রুটি একে অপরের কাছে প্রকাশ করে এবং প্রায়শ্চিত্তের আহ্বান জানায়। এছাড়াও ভুলবশত কোন অপরাধ হয়ে থাকলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয় ।
বৌদ্ধদের মতে,গৌতম বুদ্ধ এই প্রবারণা পূর্ণিমা তিথিতে ভারতের সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন তাবতিংস স্বর্গে মাতৃদেবীকে অভিধর্ম দেশনার পর। তারপরে তিনি মানবজাতির কল্যাণের জন্য সুখ শান্তির জন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ধর্ম প্রচারের জন্য নির্দেশ দেন। এই দিনেই গৌতম বুদ্ধের তিন মাসের বর্ষবাসের পরিসমাপ্তি হয়।
কথিত  আছে এই তিথিতে গৌতম বুদ্ধ ৬০ জন শিষ্যকে ধর্ম প্রচারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় প্রেরণ করেন।‘‘চরত্থ ভিকখবে চারিকং,বহুজন হিথায় বহুজন সুখায়’’এই কথাটি গৌতম বুদ্ধ তার শিষ্যদের বলেন।অর্থাৎ, তোমরা বহুজনের হিতের জন্য, কল্যানের জন্য, সুখের জন্য চারিদিক ছড়িয়ে পড়। প্রতিবছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব পালিত হয়। বৌদ্ধদের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত শুভ দিন।
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক, সুনামগঞ্জ।
০১৭১৬৭৩৮৬৮৮
sdsubrata2022@gmail.com

ফোকাস মোহনা.কম