‘প্রতিষ্ঠানের বেদখলকৃত জমিগুলো উদ্ধার করা হবে’

চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন

চাঁদপুর:  চাঁদপুর পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে ও শিক্ষিকা ফারজানা বেগমের পরিলনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান।
তিনি বক্তব্যে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিল তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করছি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। কিছুদিন আগে আমরা একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করেছিলাম। সেই ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। যারা এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন তাদের অনেকেই মৃত্যু বরণ করেছেন। আমি এ বিদ্যালয় নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাইনা, এ বিদ্যালয়টিতে আমাদের এ অঞ্চলের ছেলে মেয়েরাই পড়া লেখা করছে। ১৯৭২ সালে যখন এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয় তখন এ অঞ্চলে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। কালের বিভর্তনে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকে পর্যায় থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাকিটা সময়ের ব্যাপার। এখানে মেয়েদের জন্য কোনো কলেজ না থাকার তরুনীরা এসএসসি পরীক্ষার পর আর কলেজে পড়তে পারেনা, তাদের কে না হয় পড়া লেখা ছেড়ে দিতে হয়, না হয় স্বামীর বাড়িতে যেতে হয়। বিদ্যালয়ে যারা মাধ্যমিক পড়ালেখা করেছে সে যেন এ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাশ যাতে করতে পারে সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি চাঁদপুর পৌরসভার পরিচালিত ৩ টি উচ্চ বিদ্যালয়ে বহুতল ভবন করে দিয়েছেন। আর এই শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়টিকে কলেজে রূপান্তর করেছেন।
তিনি বলেন, মেট্রিক আর ইন্টারমিডিয়েট এ দু বছরে মানসিকতার অনেক পরিবর্তন হয়। তার যেমন একটা পরিবর্তন হবে তেমনি তার পরিবারের একটা পরিবর্তন হবে। ইন্টারমিডিয়েট পাশ করলে পরিবারের আগ্রহ বাড়ে যেন তার মেয়ে ডিগ্রী বা মাস্টার্স পড়ে। তাই আমি মনে করি স্কুলের সাথে স্কুলের উত্তরন ঘটবে চারপাশের পরিবর্তন ঘটবে। এ চিন্তা থেকে আমরা চেষ্টাটা করেছি।  যাদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ও বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটবে।আমরা সৌভাগ্যবান আমাদের মাটি ও মানুষের নেতা আমাদের দীপু আপা সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী। তিনি শিক্ষা মন্ত্রী থাকার সুযোগে আমাদের যে কাজ গুলো দুঃস্বপ্ন মনে হয় তা সহজ হয়ে যায়। আমাদের বিদ্যালয়টি কলেজ করার বিষয়টি অনেক জটিলতা ছিল আমি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাবো প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক স্যার কে। তার ক্রমাগত চাপ না থাকতো ও আগ্রহ না থাকতো তাহলে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি কলেজে রূপান্তর করতে দেরি হতো। আমাদের প্রিয় নেতা শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি আপা থাকার কারণে বিষয়টা একেবারে সহজ হয়ে গেছে। আপা থাকার কারণে আরো সহজ হয়েছে ভবনটি দ্রুত উপরের দিকে উঠছে। আমাদের পৌরসভার ৭ টা বিদ্যালয়। তার মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩ টি আর প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪ টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩ টির বহুতল ভবন আমরা পেয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ভবন গুলি পেয়েছি। বিদ্যালয়ে যে সব কাজ বাকী রয়েছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে করা হবে। আমাদের কিছু শর্ত আছে আমাদের ভূমির পরিমান ৭৫ শতাংশ থাকতে হবে কলেজ করা হলে। আমাদের বিদ্যালয়ের ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি ভূমি রয়েছে। অনেক ভূমি আমাদের দখলে আছে, কিছু জমি মামলা চলমান। আমাদের বেদখল জমিগুলো উদ্বার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জমি আমরা নেব। আমরা যদি সবাই মিলে এক সাথে থাকি একটি প্রতিষ্ঠানের জায়গা কেউ খেয়ে ফেলতে পারবে না। আমি শিক্ষক শিক্ষিকা মন্ডলীকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই,আপনারা শহীদ যাবে উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিকে বড় অর্জন আপনাদের মাধ্যমে হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ে এ বছর শতভাগ পাস করেছে। এটি আপনাদের কারণে সম্ভব হয়েছে। আমি পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে আবারো কৃতজ্ঞতা জানা। আমি বিশ্বাস করি এটি যেমন আপনাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছে তেমনি আমাদের কেউ করেছে। কবি বাবার জয় কেউ করবে। তারা ভাববে এই বিদ্যালয়ে ভালো  পড়ালেখা হচ্ছে। অভিভাবকদের আগ্রহ বাড়বে ও বিদ্যালয়ের চাপ বাড়বে, এই চাপ হবে সুখের চাপ। তারা ভাববে এই বিদ্যালয়ের ভালো, এখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে চায়। সেই সুখের চাপটা আমরা ইনশাল্লাহ ভালোভাবে মোকাবেলা করব, ভাল ফলাফল করলে আমাদের চাপটার স্বার্থক হবে। তোমরা যারা আজকে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পূর্বে নৃত্য করেছ খুব সুন্দর হয়েছে। আজকে যারা পুরস্কার পাবে তাাদের মাঝে আনন্দ, আর যারা পুরস্কার পায়নি, তোমরা চেষ্টা করবে আগামীতে ভাল করার জন্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা অফিসার  কামাল হোসেন। প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওমর ফারুক। আরোও বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বাবু পাটোয়ারী, আয়শা রহমান, খালেদা বেগম, ইউনুস সোহেব, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য এম আই মমিন খান।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ৪২ টি ইভেন্টে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন,জেলা পরিষদ সদস্য আয়শা রহমান লিলি,মিবুর রহমান মাইজ্জাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
কোরআন তেলোয়াত করেন শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, মানপত্র পাঠ করে এসএসসি পরীক্ষার্থী আফরোজা নাদিয়া।
ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম