পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে হবে

--- জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন। ছবি: ফোকাস মোহনা.কম।

সুজনের আয়োজনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বর্তমান বাস্তবতা ও করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেছেন, অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা থামিয়ে দেয়া যাবে না। তাহলে একজন সাংবাদিকের পেশাদারিত্ব থাকবে না। অনেকে অনেক কথা বলবে, কিন্তু আপনি যদি একজন দক্ষ সাংবাদিকের পরিচয় দিতে চান, দেশ ও বিদেশে পরিচিত হতে চান, তাহলে আপনাকে আপনার কর্মদক্ষতার মাধ্যমে অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে হবে। আমি বলবো, অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা করার আগে নিজকে ঠিক করতে হবে আপনি কি চান। আপনি কি ভয় পেয়ে থেমে যাবেন, নাকি আর্থিক সুবিধা নিয়ে পিছিয়ে আসবেন, সেই সিদ্ধান্তটি আপনাকে আগে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর আয়োজনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বর্তমান বাস্তবতা ও করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিকতাকে কেন দেশের চতুর্থস্তম্ভ বলা হয়। এর অর্থ হচ্ছে আপনারা যে কোন বিষয় অনেক গভীর থেকে তুলে এনে সরকারের সামনে উপস্থাপন করেন। যার কারণে সরকার ওই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। আপনারা দেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় বলেন, উনাদেরকে বলার সুযোগ দেন। কারণ আপনাদের মাধ্যমে সরকার অনেক তথ্য জানতে পারে। আপনারা করোনার সময়ে অনেক সুন্দর সংবাদ করেছেন। করোনা ভাইরাস, টিকা ও গুজবের ব্যাপারে অনেক সংবাদ হয়েছে। এগুলো সরকারের নজরে এসেছে এবং সরকার সজাগ হয়েছে এবং সেই অনুসারে সরকার অনেক ব্যবস্থাও নিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মূলত অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতার জন্য আপনার নিজের সিদ্ধান্তই হচ্ছে বড়। আপনি যদি মনে করেন আমি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এটি করবো, তাহলে যত বাধাই আসুকনা কেন আপনি সফল হতে পারবেন। কারণ আপনি দেশ ও জাতির জন্য কাজ করছেন।

মনির হোসেন বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার জাতীয় সংসদে তথ্য অধিকার আইন পাশ করে। দেশের সকল আইন নাগরিকের উপর খবরদারি করে। কিন্তু তথ্য অধিকার আইনটি হচ্ছে এমন, যাতে আপনি সরকারের উপর খবরদারি করতে পারবেন। তথ্য অধিকার আইন পাশ হওয়ার পর অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতার বিষয়টি অনেক এগিয়েছে। এই আইনের কারণে আপনি খবরের অন্তরালের খবর বের করে আনতে পারবেন।

সুজন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জীবনের সভাপতিত্বে ও সুজন চাঁদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশার সঞ্চালনায় উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, মির্জা জাকির, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল রুবেল, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল-ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, মতলব উত্তর প্রেসক্লাব সভাপতি বোরহান উদ্দিন ঢালিম, প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শান্ত ও সাংবাদিক শাওন পাটওয়ারী প্রমূখ।

“অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বর্তমান বাস্তবতা ও করণীয়” বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সুজনের যুগ্ম সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্যাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজন আঞ্চলিক সমন্বয়কারী সৈয়দ নাছির উদ্দিন।

সভায় বক্তারা বলেন, আর্থিক নিশ্চয়তা দরকার। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই ধরণের সুযোগ দেয়া হলে অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা করা যাবে। বিশেষ করে আজকে যে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়েছে তা খুবই বাস্তব উপযোগী এবং নিরপক্ষতা বঝায় রেখে করা হয়েছে। যা একমাত্র সুজনের পক্ষ থেকে করার কারণে সম্ভব হয়েছে। সুজনের এই ধরণের আয়োজন অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা করার ক্ষেত্রে উৎসাহ যোগাবে।

সভায় সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় ও জাতীয় গনমাধ্যমের সাংবাদিকগণ অংশগ্রহন করেন।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম