পতিত জমিতে পেঁপে চাষ করে কৃষকদের ভাগ্য বদল

নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলা দিন-দিন কৃষি বিপ্লবের কেন্দ্র বিন্দু হতে চলেছে। নানা প্রতিকুলতায় বেড়ে উঠা এ অঞ্চলের জনবসতি এখন প্রতিকুল পরিবেশেও নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে নিজেদের জীবনমান পরিবর্তনে রাত দিন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। নিজেদের কঠোর পরিশ্রম, সরকারি সহযোগীতা আর একদল এনজিও কর্মকর্তাদের পরামর্শে বদলে যাচ্ছে এখানকার চাষীদের জীবনমান।-বাসস।

সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামে সরে জমিনে গিয়ে দেখা হয় কৃষক আব্দুল কুদ্দুসের সাথে। মসজিদের পরিত্যাক্ত জমিতে সরকারি প্রণোদনায় পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলেছেন এ কৃষক। সরকারি ভাবে পেঁপে চারা, সার, কিটনাশক ও সঠিক পরামর্শে এক একর জমিতে ২০০টি পেঁপে চাষ করেছেন তিনি। আনুমানিক ৩৫ টন পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন তিনি। এতে মাত্র ২০ হাজার টাকা খরছে ২ লক্ষাধিক টাকা লাভের সম্ভাবনা রয়েছে তার।

এছাড়া একই সময়ে, একই জমিতে মৌসুমে সবজি আবাদেও অর্ধলক্ষাধিক টাকা লাভবান হন তিনি। এক সময়ের এই পতিত জমিতে এখন নিজের বেকারত্ব দূর করে ভাগ্য বদলের স্বাক্ষর রেখেছেন এই চাষী।

আব্দুল কুদ্দুসের মতো গ্রীণ লেডি হাইব্রিড জাতের পেঁপে চাষ করেছেন একই এলাকার নারী চাষী বেগম ফজিলাতুনন্নেছা। ১একর জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরছ গুণতে হয়েছে তার। বসত ঘরের পাশে অনাবাদি জমিতে পেপে চাষ করেছেন তিনি। অনুকুল পরিবেশ আর ভালো দাম পেলে ফজিলাতুনন্নেছাও লক্ষাধিক টাকার পেপে বিক্রি করতে পারবেন। প্রতি কেজি পেঁপের বাজার দর এখন ২০ টাকা। তবে পাকা পেঁপের দাম বেশি। প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকা।

ফজিলাতুনন্নেছার দেখাদেখি এবং স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (মাঠ কর্মী) ইকবাল হোসেনের পরামর্শে নিজ বাড়িতেই হালিমা বেগম পেপে চাষ করেছেন। হাজার দশেক টাকা খরচ করে তিনিও অর্ধলক্ষ টাকা লাভবান হবেন বলে জানান। কম জায়গায় স্বল্প খরছে, ভালো দর পাওয়ায় বাণিজ্যিক পেপে চাষে ঝুকছেন সুবর্ণচরের চাষীরা।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ জানান, সুবর্ণচর একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানকার কৃষকরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে বলে প্রতিকুল এবং অনুকুল দুই পরিবেশেই ভালো ফলন তুলতে সক্ষম। তাছাড়া এখানকার কৃষকদের জন্য সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা দ্রুত তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হয়। কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে বিনা মুল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি, বীজ, সার, কিটনাশক প্রদান করা হয়।

পেপে চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, পেঁপে এক সময় সুবর্ণচরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হতো না। এবার সরকারি প্রণোদনায় বাণিজ্যিক চাষ হলেও আগামীতে অনেক চাষী পেঁপে চাষে আগ্রহী হবে।

ফম/এমএমএ/

ফোকাস মোহনা.কম