চাঁদপুর: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় চাঁদপুরের মতলব উত্তরে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের দোকান পাট ও বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১৩ নং ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের নাগপাড়া এলাকার কয়েকটি বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নারী-পুরুষসহ ১৫ জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন নাগপাড়া এলাকার মৃত হরেন্দ্র চন্দ্র নাগের পুত্র এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অমৃত লাল নাগ (৮০), মৃত সুনীল চন্দ্র সূত্রধরের স্ত্রী কানন বালা (৬৫), মনোহর চন্দ্র সরকারের ছেলে অরুণ সরকার (৪৫), সতীশ চন্দ্র সূত্রধরের ছেলে’ সঞ্জিত চন্দ্র সরকার সূত্রধর (৩৫), পবিত্র নাগের ছেলে শ্রীবাস নাগ (১৭), গৌর প্রসাদ নাগ (২১), মৃত শচীন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে অশোক চন্দ্র বিশ্বাস (৫০), অশোকের স্ত্রী (৪৩), শচীন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে দীপক বিশ্বাস (৫৫) এবং মনোহর সরকারের ছেলে শান্তি সরকার (৪৯) সহ আরো অনেকে।
এদের মধ্যে আহত অশোক চন্দ্র বিশ্বাসকে গুরুতর আহত অবস্থায় গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং বাকি আহতরা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতরা জানান গত ২৮ নভেম্বর মতলব উত্তর উপজেলার ১৩ নং ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মোড়ক প্রতীকের বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী রঞ্জিত প্রধানীয়ার কর্মী-সমর্থকরা তাদের উপর এ হামলা চালিয়েছে।
তারা জানান, একই ওয়ার্ডের পরাজিত মেম্বার প্রাথী ফুটবল প্রতীকের সুখরঞ্জন সরকার সুকেনের কর্মী সমর্থক হিসেবে তারা নির্বাচনে কাজ করেন। এতে সুখরঞ্জন সরকার সুকেন পরাজিত হওয়ার পর থেকেই বিজয়ী প্রার্থী রঞ্জিত প্রধানীয়ার কর্মী-সমর্থকরা এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে এবং তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। একইভাবে নির্বাচনের পরের দিন ২৯ নভেম্বর সকালে তারা এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন। এসময় রঞ্জিত প্রধানীয়ার কর্মী আনন্দ সূত্রধর ও আকাশ প্রধানিয়া সঞ্জিত নামের এক কর্মীকে রগ কেটে দিবে বলে হুমকি প্রদান করেন।
তারা জানান, একই দিন সন্ধ্যায় রঞ্জিত প্রধানিয়ার কর্মী-সমর্থক নিখিলের ছেলে সুমন, অমূল্যর ছেলে আনন্দ, বলহরীর ছেলে নারায়ণ, সুনীলের ছেলে দীপক এবং মেম্বারের ভাই রামকৃষ্ণ সহ পরাজিত মেম্বারপ্রাথী সুখ রঞ্জন সরকার সুখেনের বাড়ির পাশের দোকানে গিয়ে বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এ সময় তারা এসব উস্কানিমূলক কথাবার্তা না বলার জন্য অনুরোধ করলে তারা গায়ে পড়ে তাদের কয়েক জনের ওপর হামলা চালান। মুহূর্তের মধ্যেই রঞ্জিত প্রধানীয়ার অন্যান্য কর্মী সমর্থকরা দলবল নিয়ে এসে নাগপাড়া এলাকার দোকান পাট এবং কয়েকটি বাড়ি ঘরে ও কর্মীসমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদেরকে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করেন। এ সময় হামলাকারীরা দোকানপাট এবং বাড়িঘরে লুটপাট করেন বলেও তাদের অভিযোগ। হামলার সময় নাগপাড়া এলাকার বিভিন্ন বাড়ির নারী-পুরুষরা জীবন বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে নদী সাঁতরে দাউদকান্দি থানায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন। পরবর্তীতে ট্রিপল নাইনে কল করলে মতলব উত্তর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফম/এমএমএ/