দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে

মোঃ আকতার হোসেন।। ২০২০ এর মার্চের দিকে যখন দেশের মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া শুরু করে এবং দেশের মানুষের ও পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মৃত্যু শুরু হয় তখন সবার মনে সৃষ্টিকর্তা কাছে একটায় প্রার্থনা ছিলো যেন সবাই এই বিপদ থেকে রক্ষা পায় এবং প্রাণে বেঁচে যায়। তখন নতুন রোগের ধরন এবং সঠিক চিকিৎসা জানা ছিলো না বলে অনেকেই বাসায়, হাসপাতালে ছটফট করতে করতে মারা গেছে। এমনকি করোনা হলেই মনে হতো হয়তো প্রাণ নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরতে পারবে না। এমনটাও হয়েছে অনেকের। অনেক বড় বড় শিল্পপতিকেও এই রোগ থেকে ডাক্তাররা বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছেন। কেউ কেউ এটাও বলেছেন আমার যা কিছু আছে সর্বস্ব নিয়ে যান আমাকে বাঁচান! অনেক ডাক্তার রোগীদের সেবা করতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন এবং অনেক ডাক্তার ভয়ে রোগী দেখা থেকে বিরত রয়েছিল।
অনেকেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে, আবার অনেকেই সৃষ্টিকর্তার কৃপায় বেঁচে আছে। যাদের করোনা হয়েও বেঁচে আছে তারা যে খুব একটা ভালো আছে তা কিন্তু নয়!
এখনো তারা একটা কঠিন সময় পার করছে। নানান রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে, সংসারের কাজ, দায়িত্ব সবকিছু ভুলে যাচ্ছে, কাজে মন বসছে না, কারণে অকারণে রেগে যাচ্ছে, হাঁটু ব্যথা, কোমড় ব্যথা আজ এই রোগ হলে কাল অন্য রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। সর্বোপরি বেশিরভাগ সময় দুশ্চিন্তা ভুগছে তারা।
যাদের করোনা হয়েছে শুধু তাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা কিন্তু নয়, যাদের বয়স কম, স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী তাদেরও পড়ালেখায় মনোযোগ অনেকটা কমে গেছে। দুইবছর টানা অনলাইনে পড়াশুনা করার কারণে পড়াশুনায় অমনোযোগী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পড়া মনে রাখতে পারছে না। এস এস সি, এইচ এস সি এবং ইংরেজি মাধ্যমের ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষার্থীরা যেখানে সকাল থেকে স্কুল করে, কোচিং করে বাড়ি ফিরতো সেখানে দুই তিনটা ক্লাস করে তারা হাঁপিয়ে উঠছে। এই দুই বছরে শিশু থেকে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক পিছিয়ে গেছে যেটা পূরণ হতে তাদের অনেক সময় লেগে যাবে।
আবার অনেকেই করোনায় চাকরি হারিয়ে জমানো টাকা শেষ করে নিঃস্ব হয়ে গেছে। শুরু থেকে খরচ চালাতে না পেরে যারা গ্রামের দিকে ছুটে গিয়েছিলো তাদের অনেকেই টাকার অভাবে এখনো শহরমুখী হতে পারেনি।
সামান্য রোজগার করে যা পাচ্ছে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অসুস্থ হলে টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছে না, যার কারণে বেশিরভাগ ঘরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিছু লোক মানসিক চাপের মধ্যে আছে, যার কারণে হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের।
যারা সৎভাবে জীবনযাপন করে তাদের অনৈতিক কাজ করে টাকা রোজগার করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গরীব-দুখী মানুষ যারা আছে, সম্মান রক্ষার্থে বলতেও পারে না আবার চলতেও কষ্ট হয়, তাদের দিকে দৃষ্টি রেখে, দ্রব্যমূল্য সমতার মধ্যে রেখে যেন তাদের প্রতি সদয় হয় এবং প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে।
ফম/এমএমএ/

ফোকাস মোহনা.কম