মতলব উত্তর (চাঁদপুর): বৈরি আবহাওয়াও দমাতে পারেনি মতলব উত্তর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের। উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবীতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই মাঠে ছিল শিক্ষকরা।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের প্রধান গেইটে অবস্থান নেয় ৭ শতাধিক শিক্ষক। কর্মসূচিতে শিক্ষকরা উপজেলা গেইটে সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন লক্ষে মানববন্ধন করে।মানববন্ধনে বিভিন্ন বিদ্যালয় হতে আগত সহকারী শিক্ষকরা বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বক্তব্য রাখে।
এ সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে বক্তবঢ রাখেন, শিকারিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কলাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ফরাজীকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল বাতেন প্রধান, ছেঙ্গারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হুমায়ুন কবির, দক্ষিণ ব্যাসদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্যামল কুমার বাড়ৈ, জীবগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রহমতুল্লাহ চৌধুরী, ৯২নং গজরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শাহ আলম, দক্ষিণ ব্যাসদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নূরে আলম, উদামদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মামুনুর রশিদ, উত্তর ছোট হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জোহরা জান্নাত, কিনারচক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন,দীর্ঘদিন ধরে তারা সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী ১০ম গ্রেডের জন্য আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু বিগত সরকার কোন ভ্রক্ষেপ না করে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী মেনে নেয়নি। নতুন সরকারের কাছে তাদের ন্যায্য দাবী অতি দ্রুত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ করেন বক্তারা। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
তারা আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য পাওয়া ১০ম গ্রেড দাবী করে আসলেও কোন অজানা কারণে সরকার দাবী মেনে নিতে কালবিলম্ব করছে। ফলশ্রুতিতে অনেক শিক্ষক এই পেশায় এসে হতাশ হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন,তাদের ধরে রাখা যাচ্ছে না। সহকারী শিক্ষকরা এখন জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন পান, অর্থাৎ তারা এখনো সরকারের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। একজন শিক্ষক তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী, এই লজ্জা রাষ্ট্রের। বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি সহকারী শিক্ষক কাজ করছে, যাদের অধিকাংশেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা অনার্স-মাস্টার্স। বর্তমান নিয়োগ বিধিতেও শিক্ষাগত যোগ্যতা অনার্স-মাস্টার্স চাওয়া হয়,তাহলে শিক্ষকরা কেনো তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থাকবে? পেটে ক্ষুধা নিয়ে মানসম্মত শিক্ষাদান করা সম্ভব নয়।শিক্ষকরা মানসম্মত বেতন পেলে তারা জাতিকে আরও বেশি সার্ভিস দিতে পারবে। আর শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করতে এবং মেধাবী তরুণদের আকৃষ্ট করতে সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড প্রদানের কোন বিকল্প নেই।
ফম/এমএমএ/আরাফাত/