টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের সংখ্যা ২ কোটি করা হবে: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। ছবি: সংগ্রহীত।

স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষকে মূল্যস্ফীতি থেকে স্বস্তি দিতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) রেশনিং কার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

তিনি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বড় সমস্যা। সরকার স্বল্প আয়ের মানুষকে তাই এর থেকে রেহাই দিতে টিসিবির মাধ্যমে প্রতিমাসে ১ কোটি পরিবারের নিকট সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। এই রেশনিং বা ফ্যামিলি কার্ডের সংখ্যা ২ কোটিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৪ আগষ্ট) রাজধানীতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারিখাতের দৃষ্টিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জানুয়ারি-জুন ২০২২) বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে জাতীয় সংসদ সদস্য ও এফসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

শামসুল আলম বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ আছে বটে, তবে সেটি সাময়িক। আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা কোথাও ব্যাহত হয়নি। অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিও কোনভাবে আতংকিত হওয়ার মত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নিকট কোন বেলআউট চাওয়া হয়নি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভাল অবস্থায় আছে। ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। আইএমএফ’র নিকট বাজেট সহায়তা চেয়েছি; এর কারণ আমরা ব্যবসার প্রসার চাই, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ চাই। ঋণ নেওয়া কোন দূর্বলতা নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুরের মত দেশ নিয়মিত ঋণ গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, আমরা দ্রুত ঋণ নিতে পারলে বৈশি^ক সংকটের কারণে মুদ্রাবাজারে ডলারের যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তা দ্রুত দূর করা যাবে।
অর্থনীতির নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন সামনে চলে আসায় কেউ কেউ আতংক তৈরির চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নিচ্ছে। সংশয়বাদী অর্থনীতিবিদরাও এই কাজে যুক্ত হয়েছে। তিনি দেশবাসীকে তাদের কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংক-আমানত এবং ঋণের সুদের হার কিছুটা বৃদ্ধির বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করা যেতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে অন্য বক্তারা বলেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশের অর্থনীতিই নয়, বৈশি^ক সংকেটর কারণে পুরো বিশ^ব্যবস্থাই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, জ¦ালানি সংকট এবং সাপ্লাইচেইনের বিপর্যস্ত অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিতে, বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, এমতাবস্থায় আমাদের অর্থনীতিতে বিদ্যমান চাপ সাময়িক বলে মত প্রকাশ করেন।

ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে ব্যাহত করতে পারে বলে উল্লেখ করেন।-বাসস।

ফম/এমএমএ/

ফোকাস মোহনা.কম