জীবন ঠিক নদীর মতই বয়ে চলে

প্রতিকী ছবি।
মোঃ আকতার হোসেন।। সৃষ্টিকর্তা মানুষের মধ্যেই বিশেষ কিছু ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের মাঝেই রয়েছে ধৈর্য ও সহ্যশক্তির মত বিশেষ কিছু গুণ। তাই মানুষই পারে মাইনাস ৫০ থেকে ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রা শরীরে সয়ে নিতে। ঠিক একই ভাবে মানুষ সেই সমান কষ্ট ও দুঃখের বোঝাও বয়ে যেতে পারে মৃত্যু পর্যন্ত। বড়ই অদ্ভুত মানুষের মন! মানুষ যখন কষ্টকে প্রথম চিনতে পারে তখন থেকেই শুরু হয় জীবনের সংগ্রাম। সমস্ত শক্তি দিয়ে চায় সেই কষ্ট থেকে বের হয়ে আসতে কিন্তু দেখা যায় সেই কষ্টগুলোই অনেকের জন্য চিরস্থায়ী হয়ে যেতে।
কোনো কিছুই জীবনে চিরস্থায়ী নয়। আবেগ, অনুযোগ কিংবা অভিযোগ-কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সামাজিক সম্পর্কগুলো সব সময়ই এক রকমের গাঢ় হবে না। আজ আপনার কাছে যাকে ভালো লাগছে, কালকে তাকে আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে। আজ যিনি প্রশংসা করছেন, কাল তিনি আপনার কঠোর সমালোচক হতেই পারেন। কখনোই অন্যদের সঙ্গে তুলনা করবেন না। নিজেকে নিজের সঙ্গে তুলনা করতে শিখুন।
মানুষ যখন বুঝতে শেখে এই কষ্ট ছেড়ে যাওয়ার নয় তখন কষ্টের সাথেই গড়ে তুলে সখ্যতা। আপোষ করে নেয় নিজের সাথে নিজেকে। এটা পরাজয় নয় বরং জীবন ও কষ্টের সাথে সমঝোতা যাকে বলে। জীবন তো ঠিক নদীর মতই বয়ে চলে। নদীর গতির মত জীবনের গতিকেও রোধ করা সম্ভব নয়। বয়ে চলা জীবননদীর মোহনা অবশেষে মিলে মৃত্যু নামক সাগরের সাথে। চলতি গতিপথের নদীর ধারে কিছু বিছিন্ন মনোরম দৃশ্যই হলো জীবনের সুখ নামে পরিচিত।
জীবন হলো সময়ের কাছ থেকে কিছু দিনের জন্য ধার করা অস্তিত্ব। যার শেষ রয়েছে। নানা কিছু পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। রাখে না শুধু সময়কে একটু বেঁধে দিতে। এভাবেই সময় চলে যাচ্ছে, জীবন ফুরিয়ে যাচ্ছে। মাঝ-খানে শুধু জীবনের কর্মের প্রতিফল রেখে যাচ্ছে, যার উপর মানুষের বিচার ফয়সালা করা হবে। জীবনঘড়ি মানুষের প্রত্যহ বিবর্তনশীল কর্মধারায় প্রবাহিত একটি সীমিত হায়াতের ওপর নির্ভরশীল। এটাই চিরসত্য কথা। বেঁচে থাকার যুদ্ধে যৌবনের জোয়ারে প্লাবিত এ জীবন নদীতে একদিন ভাটা পড়বে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

ফোকাস মোহনা.কম