চাঁদপুর: সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চাঁদপুর ও এসিজি গ্রপের সাথে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতবিনিময় সভাটি ২০ নভেম্বর ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়।
“স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সেবা নিশ্চিতকরণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করণীয় ও আমাদের প্রত্যাশা” শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সনাকের সাবেক সভাপতি ও সদস্য কাজী শাহাদাত।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান। মতবিনিমময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাকের সহ-সভাপতি মোঃ আলমগীর পাটওয়ারী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান সনাক ও এসিজি গ্রুপ কর্তৃক উত্থাপিত প্রতিটি সমস্যা ও সুপারিশের জবাব দেন। তিনি বলেন, আপনাদের এই সুপারিশগুলো হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে। হাসপাতাল ডাক্তার ও নার্স থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এই জনবল সংকটের মধ্যে থেকেও আমরা হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নের চেষ্টা করছি। সমাজ ব্যবস্থায় যেমন পরিবর্তন এসেছে তেমনি হাসপাতালের সেবার মানের অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা জনগণের সেবা নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিগত দুই মাস ধরে হাসপাতালে বেশ কিছু ইন্টার্ন ডাক্তার সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। ফলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমি বিশ^াস করি। পূর্বে হাসপাতালে কোন নিরাপত্তা কর্মী ছিল না। এখন ১২জন আনসার নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। এদের মধ্যে দুইজন নারী সদস্যও রয়েছে। এছাড়াও আরও ১২জন আনসার সদস্য কয়েকদিনের মধ্যে যোগদান করবে। তিনি আরও বলেন, সনাক ও এসিজি গ্রুপের সহযোগিতায় হাসপাতালের সেবার মানের অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমি প্রত্যাশা করছি সনাকের এধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, অটোমেশন হয়ে গেলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে এবং অনেক সমস্যার সমাধান হবে। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথাসময়ে হাসপাতালে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একজন রোগীর সাথে একাধিক লোক আসার কারণে হাসপাতালের পরিবেশও বিনষ্ট হচ্ছে। এব্যাপারে জনগণকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। হাসপাতালে যে ছোট ছোট সমস্যাগুলো আছে তা সমাধান করা হবে। হাসপাতালের দালালের দৌরাত্মও রয়েছে। দালাল রোধে কাজ করছি। তিনি হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়ন ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। মতবিনিময় সভা আয়োজন করার জন্য তিনি সনাক-টিআইবিকে ধন্যবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সনাকের সাবেক সভাপতি ও সদস্য কাজী শাহাদাত বলেন, সেবা গ্রহিতাদের এতো চাপ সহ্য করেও হাসপাতাল সেবার মানোন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা মূলত হাসপাতালের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কর্তৃপক্ষকে অবগত করে সমাধানের চেষ্টা করে থাকি। বিগত দিনেও আমরা হাসপাতালের বেশ কিছু সমস্যা উত্থাপন করেছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাধানও হয়েছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে বাকীগুলোরও সমাধান হবে। রোগীদেরও আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তিনি হাসপাতালে একজন পাবলিক রিলেশান অফিসার থাকা দরকার বলে মনে করেন। কোন কিছুই রাতারাতি পরিবর্তন করা যায় না এবং একেবারে নির্মুল করা যায় না। সেবাদাতা ও গ্রহিতাদের মধ্যে আন্তরিকতা ও নৈতিকতা ছাড়া সেবার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। তবে হাসপাতালে সেবার মানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তিনি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাসুদ রানার সঞ্চালনায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের ইন্টার্ন ডাঃ সাফায়াত সাফি উল্যাহ, সনাক সদস্য রফিক আহমেদ মিন্টু, এবিএম নজরুল আমিন সাজু, লায়ন মাহমুদ হাসান খান, পাপড়ি বর্মণ, মোহাম্মদ আসিফ-উল-ইসলাম, এসিজি গ্রুপের সমন্বয়কারী মাঈনুল ইসলাম মানিক, সহ-সমন্বয়কারী আশিক বিন রহিম, সদস্য শাহরিয়ার পলাশ, প্রণব চন্দ্র দাস, আয়েশা আক্তার রুপা, সুলতানা আক্তার, নার্সিং সুপারভাইজার মাকসুদা আক্তার প্রমুখ। হাসপাতালে সেবাদাতাগণের সময়ানুবর্তিতা, প্রত্যাশিত জনবল নিশ্চিতকরণ/ আধরষধনষব ফড়পঃড়ৎং ধমধরহংঃ ংধহপঃরড়হবফ ঢ়ড়ংঃ, হাসপাতালের সেবার উন্নয়নে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোকে কার্যকর করা, ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার-এর আধুনিকায়ন/মা বান্ধব করা, দৈনিক ঔষধ সরবরাহের তালিকার আধনিকায়ন ও হালনাগাদকরণ, ঈড়সঢ়ষধরহ ৎবফৎবংং পড়সসরঃঃবব (অভিযোগ নিস্পত্তি কমিটি) ধহফ ারংরনষব মঁরফবষরহব, হাসপাতালের ওয়েব পোর্টাল হালনাগাদকরণ, দায়িত্বপ্রাপ্ত (উবংরমহধঃবফ ঙভভরপবৎ) কর্মকর্তা নিয়োগ ও ডিআইও বোর্ড স্থাপন, জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে তথ্য প্রদান ও এ সস্পর্কিত রেজিস্টার/ফাইল সংরক্ষণ, হাসপাতালের সিটিজেন চার্টার হালনাগাদকরণ, পরামর্শ ও অভিযোগ বক্স কার্যকরকরণ, তথ্যের উন্মুক্ত প্রকাশ (আইইসি উপকরণ, সিটিজেন চার্টার, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো হালনাগাদ ও ডিসপ্লে করা, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়াও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, সেবিকাবৃন্দ, ইয়েস গ্রুপের দলনেতাসহ সদস্যবৃন্দ।
ফম/এমএমএ/