চির নিদ্রায় শায়িত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তাক হায়দার চৌধুরী

চাঁদপুর: চাঁদপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজসেবক আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরীর দাফন ধর্মীয় রিতিনীতি অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে, দিনব্যাপী বৃস্টি অপেক্ষা করে রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দসহ হাজার-হাজার মানুষ জানাজার নামাজে অংশগ্রহন করেন।

জানাজা শেষে তাকে তার পারিবারিক চৌধুরীবাড়ির কবরের স্থানে চীর নিদ্রায় শায়িত করা হয়। আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল (৭৫) বছর। তার রয়েছে ২ ছেলে ১ মেয়ে। তিনি মৃত্যুকালে ছেলে-মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান।

রোববার (৫ ডিসেস্বর) বিকেল সাড়ে ৫ টায় ঢাকাস্থ মিরপুর ডিওএইচএসে তার একমাত্র কন্যার বাসায় ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি… রাজেউন)। এদিনই রাত ১০ টায় মিরপুর ডিওএইচএস জামে মসজিদে মরহুমের প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্টিত হয়।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বাদজোহর শহরের পুরানবাজার পূর্ব শ্রীরামদী তার নিজ বাড়ির সন্মুখস্থানে চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে প্রচন্ড বৃস্টি উপেক্ষা করে হাজারো মুসল্লীর অংশ গ্রহনে অনুষ্টিত হয় মরহুমের দ্বিতীয় নামাজের জানাজা।

আলহাজ্ব মোস্তাক হায়দার চৌধুরী ছিলেন, চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির যুগ্ন সম্পাদক ,চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি,চাঁদপুর জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি,লায়ন্স ক্লাব অব চাঁদপুর রুপালীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সভাপতি লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল জেলা-৩১৫ বি-৩ বাংলাদেশের জেলা গভর্নরের উপদেস্টা ছিলেন।

এ ছাড়া তিনি চাঁদপুর গনি মডেল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,নূরীয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,আমিনুল হক পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩নং-বালিকা প্রাধমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ গভনিং বডির সদস্য, কমিউনিটি পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চল-১০ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নামাজ পূর্বে বাদ জোহর চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এসময় মরহুমের বড় ছেলে জাতি সংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহনরত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ওমর হায়দার চৌধুরী ভার্চুয়ালি বক্তব্যে তার আব্বার জন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা করেন এবং আব্বার জানা, অজানা সকল ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করাসহ কারো কোন পাওনা থাকলে তা পরিশোধ করারও প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করেন।

এ সময় মরহুমের জন্য দোয়া চেয়ে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র তার একান্ত ঘনিষ্ঠ সহচর আলহাজ্ব নাছিরউদ্দিন আহমেদ, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাাষ্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের পক্ষে পৌর প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, বীর মুক্তি যোদ্ধা মুনির আহমেদ, চাঁদপুর গনিমডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্বাসউদ্দীন, নূরিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু তাহের তফাদার, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব রফিক আহমেদ মিন্টু, মরহুমের ভ্রাতুষপুত্র ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়সাল হায়দার চৌধুরী।

দোয়া পরিচালনা করেন চৌধুরীবাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবু নাছের। পরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মসজিদ মাঠে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠি হয়। নামাজে ইমামতি করেন পুরানবাজার হাফেজিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপল মাওলানা মুফতি খাজা আহমেদউল্ল্যা।

এসময় মুসল্লীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রশিদ, চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত, চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূইঞা, শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মন্জুরুল ইসলাম মন্জু মাঝি, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর ভূইয়া, জেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মোঃ বাবর, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, ওয়াহিদুর রহমান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, কমিউনিটি পুলিশিং অঞ্চল- ৮ এর সভাপতি নকিবুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক ফরিদ আহমেদ বেপারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান, কমিউনিটি পুলিশিং অঞ্চল- ১০ এর সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মেজবাহ উদ্দিন জুটন, হুমায়ুন বেপারী, রেজাউল করিম বিপ্লব, মোশারফ হোসেন মানিক, দোকান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহিদ হাসান প্রমুখ। মরহুমের অত্যন্তঘনিষ্ট হিন্দু নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলে, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষসহ ব্যবসায়ীবৃন্দ। এছাড়া মরহুমের আপন ছোট ভাই মহব্বত হায়দার চৌধুরী, রাজনিতিবিদ মঈনুদ্দিন হায়দার চৌধুরী (মাঈনু), তার ছোট ছেলে সাইফুল হায়দার চৌধুরী সুজনসহ বহু আত্বীয় পরিজন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১ ডিসেম্বর মোস্তাক হায়দার চৌধুরীর ছোট ভাই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদ হায়দার চৌধুরী মারা যান। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর চার দিন পর চলে গেলেন বড় ভাই মোস্তাক হায়দার চৌধুরী।

ফম/এমএমএ/

মো. শওকত আলী | ফোকাস মোহনা.কম