হাইমচর (চাঁদপুর): চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা দক্ষিণ আলগী ইউনিয়ন পশ্চিম চরকৃষ্ণপুর গ্রামে আবুল কাশেম শেখ এর দুই ভাই আব্দুর রশিদ শেখ ও মজিবুর রহমান শেখ। তাদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ঝগড়া হয়। এঘটনায় মজিবুর রহমান শেখ এর শশুর মোহাম্মদ আখন (৫৫) ঝগড়ায় জড়িয়ে অশ্লিলভাবে গালাগালি করলে আবুল কাশেম এর মেয়ে হোসনেয়ার প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মজিবুর রহমান এর শশুর ও তার পরিবারের সকলে মিলে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রসহ অতর্কিত আক্রমন করে। একপর্যায়ে মোহাম্মদ আখন তাহার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে হোসনেয়া কে মাথা লক্ষ্য করিয়া কোপ মারলে তার বাম চোখের উপড়ে আইব্রুতে পড়ে মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।
এতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে চাচা মজিবুর রহমান শেখ ভাতিজিকে ‘ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ওই আঘাতে বাতিজির বাম চোখের নিচে পরে মারাত্মক কাটা রক্তাক জখম হয়। এতে তার চোখে দুটি সেলাই লাগে এবং তার চোখ চিরতরে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। ঘটনার বিবরণ এমনিভাবে মামলায় উল্লেখ করেন হোসনেয়ারা।
গত বছর ২২ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় হোসনেয়ারা বেগম চিকিৎসা নিয়ে ২৭ অক্টোবর বাদী হয়ে হাইমচর থানায় একিট মামলা দায়ের করে।
মামলার বিবরণ থেকে আরো জানাগেছে, মোহাম্মদ আখন বাদীর পরিহিত কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতা হানি করে। তাকে রক্ষা করতে চাচা আঃ রশিদ শেখ এগিয়ে আসলে আসামী মজিবুর রহমান শেখ ও তার স্ত্রী মাকছুদা বেগম, মেয়ে তিথি আক্তার, ইভা আক্তার রশিদ শেখ ও তার স্ত্রী পারভিন বেগমের উপর এলোপাথারী কিল ঘুষি মেরে মারাত্মক নীলা ফুলা বেদনা জখম করে। একপর্যায়ে আসামী মাকছুদা বেগম পারভিন বেগমের গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
বাদী মামলার সাক্ষীদের ডাক চিৎকারে বাকী সাক্ষীগন এগিয়ে আসলে আসামীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং যাওয়ার সময় বলে এই বিষয়ে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করলে বা কোন মামলা মোকদ্দমা করলে সকল আসামীগণ বাদীকে ও বাদীর পরিবারের লোকজনকে জীবনে হত্যা করবে। বাদীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এরপর চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করেন। বাদীপক্ষ বাদীকে জরুরি ভিত্তিতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল চাঁদপুরে ভর্তি করে চিকিৎসা গ্রহন করে। পরবর্তীতে বাদীর চোখের অবস্থা আশংকা জনক দেখিলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল চাঁদপুর কর্তৃপক্ষ তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউট ও হাসপাতাল ঢাকায় রেফার করেন। ওই হাসপাতালে বাদী চিকিৎসা রত ছিল। বর্তমানে ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা চাঁদপুর জেলা জজ কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।
রবিবার (২ এপ্রিল) ভুক্তভোগী হোসনেয়ারা সাংবাদিকদেরকে জানান , তার ওপর হামলাকারী আসামী মোহাম্মদ আখন জামিনে আছেন এবং অপর আসামি মজবিবুর রহমান শেখ সহ অন্য আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকায় সুস্থ বিচার নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি।
হোসনেয়ারা আরো জানান, আমি একজন বিবাহিতা নারী। এ ঘটনায় আমার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকেরা আমাকে তারা গ্রহণ করে নিবেনা বলে জানান। তারা বলেন-যেমন ছিল ঠিক তেমন হলে তারা আমাকে নিবেনা। যারা আমাকে হামলা করে আমার একটি চোখ নষ্ট করে জীবনের স্বপ্ন শেষে করে দিয়েছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন জানান, মামলা চার্জশিট দেয়া হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
ফম/এমএমএ/