চাঁদপুর: চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চাঁবিপ্রবি)’র সাবেক উপাচার্য কর্তৃক অব্যাহতিপ্রাপ্ত দুই শিক্ষকের হুমকি-ধমকি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালরে শিক্ষকদের মানুষিক চাপ দেয়ায় চাঁদপুর মডেল থানায় সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেছেন প্রভাষক এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) বাইজীদ আহম্মেদ রনি। (যিডি নম্বর: ২৮, তারিখ-২৯ ডিসেম্বর)
জিডিতে বিবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয় অভিযুক্ত ও বহিস্কৃত শিক্ষক নাজিম উদ্দিন (২৯)। তিনি বি-বাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার সাহেব নগর গ্রামের আবু নাইম এর ছেলে।
জানা গেছে, সম্প্রতি শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য চাঁবিপ্রবির আইসিটি বিভাগের শিক্ষক নাজিম উদ্দিন অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ অবস্থায় কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তবে তিনি ঠিকই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, বিভিন্ন মিটিংয়ে অংশ নেন। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে অংশ নেন। এসময় তিনি বাইজীদ আহম্মেদ রনি হুমকি দেন।
সাধারণ ডায়েরিতে বাইজীদ আহম্মেদ রনি উল্লেখ করেছেন, ২৯/১২/২০২৪ তারিখে বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় বিবাদী (নাজিম উদ্দিন) একটি সভায় অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তিনি পেছন থেকে রাগান্বিত হয়ে আমাকে বলেন যে, ‘বেশি বাড় বাইড়েন না, সমস্যা হবে। এখন চাকুরি নাই, কখনো যদি ফিরে পাই, তখন সব কিছুই দেখব।’ এর আগেওে আমার বিভাগের শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে অসম্মানজনকভাবে ‘তুই-তোকারি’ করে কথা বলেন। বিষয়টি শিক্ষক হিসাবে আমার জন্য মানহানিকর।
অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, জিডির (সাধারণ ডায়েরি) কথা শুনেছি। চাঁদপুর সদর থানা থেকে ফোন করা হয়েছিল।
আপনাকে যেহেতু অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু আপনি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে নাজিম উদ্দিন বলেন, অব্যাহতি সম্পর্কে সঠিক নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। সিন্ডিকেটেও তা উত্থাপিত হয়নি। সাধারণ একটি মেইলে তা জানানো হয়েছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিটিংয়ে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হলে আমি অংশগ্রহণ করি।
বাইজীদ আহম্মেদ রনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষক নাজিম উদ্দিন আমাকে বিভিন্ন সময় অপমান-অসম্মান করেছেন। বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন। চাঁবিপ্রবির উপাচার্য ড. পেয়ার আহমেদের সামনেই আজ (রবিবার) তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতেই বাধ্য হয়ে আমি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আশা করি, প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার গত ৯ ডিসেম্বর দুই শিক্ষকের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক তদন্তপূর্বক সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্বে উপাচার্য উক্ত বিষয়ে কতিপয় শিক্ষক এবং কিছু ছাত্র-ছাত্রী ক্লাশ বর্জনসহ অনাকাঙ্খিত অনুরোধ কিংবা চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ঐ সকল শিক্ষক এবং সকল ছাত্র-ছাত্রীকে উক্ত বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
উল্লেখ, এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিন ও কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অব্যাহতি প্রদান করেন।
ফম/এমএমএ/