চাঁদপুর সদরে ধর্ষণ মামলার আসামী হাশিম মিজি গ্রেপ্তার

চাঁদপুর : চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের পশ্চিম হোসেনপুর গ্রামে রুজিনা বেগম (৩৬) নামে তালাকপ্রাপ্তা নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হাশিম মিজি (৫৮) নামে আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ধর্ষণের শিকার রুজিনা বেগম।

এর আগে রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে আসামী হাশিম মিজিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ হোসেন রিকাবদার।

ধর্ষণের শিকার রুজিনা বেগম পশ্চিম হোসেনপুর মিজি বাড়ীর আব্দুর রহমান মিজির মেয়ে। আর আসামী হাশিম মিজি একই বাড়ীর মৃত মোহাম্মদ মিজির ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, আসামী হাশিম মিজির স্ত্রী গত ৩ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। আর ধর্ষণের শিকার রুজিনা বেগমের স্বামীর সাথে গত ১৩ বছর পূর্বে তালাক হয়। রুজিনা বেগমের ১৬ বছর বয়সী কন্যা সন্তান আছে। তালাকের পর থেকে রুজিনা বাবার বাড়ীতে থাকেন। আসামী হাশিম মিজির স্ত্রী মৃত্যুর পর থেকে রুজিনাকে তিনি প্রায় সময় বিয়ের প্রস্তাব দিতেন। এরই মাঝে গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর রাতের বেলায় রুজিনা প্রকৃতি ডাকে ঘরের বাহিরের বাথরুমে গেলে ওই সময় নিরবে হাশিম মিজি তার সয়ন কক্ষে অবস্থান নেই। পরে রোজিনা ঘরে আসলে হাশিম মিজি দরজা বন্ধ করে বিয়ের আশ^াস দিয়ে রুজিনার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে। এই ঘটনার পর রুজিনা অন্ত:স্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। এরপর থেকে রুজিনা হাশিম মিজিকে বিয়ের জন্য বললে টালবাহানা শুরু করে। তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করে এবং সন্তান নষ্ট কলে তাকে বিয়ে করবে বলে জানায়। এই নিয়ে হাশিম মিজি ও রুজিনার স্বজন এবং এলাকার দুষ্টু প্রকৃতির সংঘবদ্ধ একটি চক্র বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। যার ফলে রুজিনা বেগম নিরুপায় হয়ে দেরিতে হলেও থানায় অভিযোগ করে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে, আশিকাটি ইউনিয়ন এর ৪ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম হোসেনপুর এলাকার সম্ভাব্য মেম্বার পার্থী মাসুদ মালের নেতৃত্বে ইউনিয়নের রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কাজী আশরাফুল ইসলাম রিপন, যুব নেতা বারেক খানসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র আসামী হাশিম মিজির পক্ষ নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে হাশিম মিজির সাথে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আছে। স্থানীয়দের দাবী এই বিষয়ে তদন্ত করলে ধর্ষণের ঘটনার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ হোসেন রিকাবদার জানান, মামলার বাদি রুজিনা বেগম আত্মসম্মানের ভয়ে বিষয়টি এতদিন গোপন রাখে। এছাড়া আসামী তাকে ভয় ভিতি প্রদর্শণ করে আসছিলো। গর্ভের অনাগত সন্তান যে কোন সময় নষ্ট করে দিতে পারে শঙ্কায় তিনি মামলা করেন। আসামীকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার আদালতে পাঠানো হয়।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম