চাঁদপুর: যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে চাঁদপুর জেলায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।
করোনার কারণে দু’বছর সীমাবদ্ধতা থাকলে এ বছর ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে পালন করছেন তাদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব।
মঙ্গলবার (৩ মে) আল্লাহ’র সন্তুষ্টি লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ লাখো লাখো মানুষ সকালে ঈদগাহ, মসজিদ ও খোলা মাঠে সামিয়ানার নিচে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
তবে জেলার হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর উপজেলায় রোববার ও সোমবার ঈদ উদযাপন হয়েছে। সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর ইসহাক (রহ.) অনুসারীরা দুইদিন এবং ওইসব এলাকার বাকী ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন।
চাঁদপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় চাঁদপুর পুলিশ লাইন্স ময়দান। সকাল ৮টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে। সাড়ে ৮টায় বেগম জামে মসজিদ ঈদের জামায়তা অনুষ্ঠিত হয়।
চিশতিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সোয়া ৮টায় ঈদের প্রথম জামায়াত এবং ৯টায় দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় পুরান বাজার মধুসুদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এবং সকাল ৮টায় বাবুরহাট হাই স্কুল ও কলেজ মাঠ ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ৮টায় পুরান বাজার এমদাদিয়া মাদ্রাসা মাঠে, সকাল ৮টায় জেলা কারাগার জামে মসজিদে, সকাল সাড়ে ৮টায় পুরান বাজার হাফেজিয়া মাদ্রাসা মাঠে, সকাল সাড়ে ৮টায় দক্ষিণ গুনরাজদী আহম্মদিয়া ঈদগাহ্ ময়দানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ৮টায় পূর্ব শ্রীরামদী ৩নং বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে, একই সময়ে টেকনিক্যাল স্কুল মাঠ, বায়তুন নুর জামে মসজিদ ঈদগাহ রামদাসদী ও মসজিদে গোর-এ-গরীবাঁ জামে মসজিদে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় চেয়ারম্যানঘাটা ঈদ জামাত এবং সকাল সোয়া ৮টায় চাঁদপুর স্টেডিয়ামে ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ঈদ জামায়াত আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ। তবে ঈদের জামায়াত শেষে ঝড়ো হাওয়া বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি থাকলেও পরবর্তীতে কমে আসে।
চাঁদপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে প্রধান ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঈদের জামায়াতে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল্রাহ মোঃ হাসান। চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ পৌর ঈদগাহ মাঠের ঈদের জামায়াতে নামাজ আদায় করেন। প্রধান ঈদ জামায়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) দাউদ হোসেন চৌধুরী, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান।
সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় চাঁদপুর পুলিশ লাইন্স ময়দানে। সেখানে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুস সলাম। পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আশাপাশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ সেখানে ঈদের নামাজের জামায়াতে অংশ গ্রহন করেন।
চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠও হাজার হাজার মুসল্লীদের অংশগ্রহনে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা মো. নিজামুল হক।
চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামায়াত: করোনা মহামারি কাটিয়ে দুই বছর পর মঙ্গলবার সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এসময় স্রষ্টার ক্ষমা, অনুগ্রহ এবং দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এতে ইমামতি করেন ফরিদগঞ্জ ফনিসাইর দারুচ্ছুন্নাত ছালেহীন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি মো. মুশিউর রহমান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঈদ জামাত কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান পাটোয়ারী, উপদেষ্টা আব্দুর রশিদ সর্দার, প্রফেসর আব্দুল জাব্বার, সহ সভাপতি আ. রশিদ মাস্টার, কামাল মুন্সি, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মিজান লিটন, প্রচার সম্পাদক শরিফ সরকার, সহ প্রচার সম্পাদক আ. রহমান, কোষাধক্ষ, অ্যাড. বদরুল আলম চৌধুরী, সদস্য অ্যাড. এজেডএম রফিকুল হাসান রিপন, মুক্তিযোদ্ধা ছানাউল্যাহ, প্রফেসর মোশারফ হোসেন লিটন, আপেল চৌধুরীসহ ধর্মপ্রান মুসল্লিরা।
এছাড়াও জেলা সদর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যথারীতি ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা সদর ও ইউনিয়নের গ্রামের ঈদগা ও মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লীরা। জেলা সর্বত্র খুবই আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন হয়।
ফম/এমএমএ/