চাঁদপুর :পবিত্র ঈদুল আযহা সন্নিকটে। ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। তবে এ বছর চাঁদপুর জেলার কোরবানির পশুর চাহিদার তুলনায় সঙ্কট রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার। তবে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর বলছে এই সংকট থাকবে না। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির পশুর আমদানি হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যানুযায়ী জেলায় খামারি আছে ৩ হাজার ২৬৯জন। এসব খামারিরাই কোরবানির পশুর চাহিদা পুরণে ভূমিকা রাখেন। ব্যাক্তি উদ্যোগ ও খামারি মিলিয়ে এ বছর জেলায় ষাড়, বলদ, গাভী, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন। এসব পশুর সংখ্যা ৬১ হাজার ৪৮৯। কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৭৮ হাজার।
জেলা সদরের বাগাদী ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামের ডেইরি খামারি খালেদ মুন্সি বলেন, আমি প্রতিবছরই কোরবানিতে বিক্রির জন্য ২৫ থেকে ৩০টি গরু লালন পালন করি। এবছর প্রায় ৩০টি ষাড় তৈরী বিক্রির জন্য প্রস্তুত আছে। এগুলো আমার খামারের নিজস্ব জাতের। ঘাসসহ দানাদার খাবার খাওয়ানো হয়। তবে খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের খরচও বেড়েছে। আমার খামারে ৮০ হাজার থেকে শুরু করে দুই লাখ টাকা মূল্যমানের ষাড় আছে।
একই ইউনিয়নের অপর খামারি আহমদ উল্লাহ। তার খামারে আছে প্রায় শতাধিক গরু। এর মধ্যে কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত প্রায় অর্ধশত ষাড়। এই খামারের শ্রমিকরা জানান, দেশীয় জাতের ষাড়ের চাহিদা বেশী। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির আগে লোকজন গরু কিনতে আসেন। তবে এখনো বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। তারাও ঘাসসহ দানাদার খাবার দিয়ে এসব গরু লালন পালন করেন।
নানুপুর গ্রামের ব্যবসায়ী বাবু আলম বলেন, আমরা সবসময় কোবানির জন্য দেশীয় জাতের ভালো গরু ক্রয় করার চেষ্টা করি। অনেকেই ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে কিংবা খামারেই গরু কিনতে পছন্দ করেন। কয়েকটি খামার ঘুরে দরদাম করে দেখলাম গত বছরের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বেশী।
এদিকে জেলার সবচাইতে বড় পশুর হাট সদরের সফরমালি ও হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ঘুরে দেখাগেল প্রচুর পরিমাণ কোরবানির পশু উঠেছে এই দুই হাটে। তবে ক্রেতারা এখন শুধুমাত্র দরদাম করছেন। এই সপ্তাহের শেষ দিকের হাটগুলোতে বেচাবিক্রি বাড়বে।
সদরে সবচাইতে দীর্ঘ সময় কোরবানির পশুর হাট বসে ইচুলী চৌরাস্তায়। এই বাজারের ইজারাদার জাকির হোসেন খান বলেন, আগামী ১০ জুন থেকে এই হাটে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন ব্যাপারীরা। আবার প্রতিবছরই এই হাট থেকে পাশবর্তী জেলা লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী থেকেও লোকজন গরু কিনতে আসেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত এই পশুর হাট চলবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, জেলার ৮ উপজেলার ৩ হাজারের অধিক খামারি এ বছর কোরবানিতে বিক্রির জন্য ৬১ হাজার ৪৮৯টি পশু প্রস্তুত করেছেন। জরিপ করে দেখাগেছে জেলার চাহিদানুসারে আরও ১৭ হাজার পশুর ঘাটতি আছে। তবে এই ঘাটতি থাকবে না। কারণ উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক ব্যাপারী জেলার হাটগুলোতে পশু আমদানি করবেন। আশাকরি আমাদের চাহিদা পুরণ হবে এবং সবাই কোরবানি করতে পারবেন।
ফম/এমএমএ/