চাঁদপুরে বন্ধ হচ্ছে না কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত, ২ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম

আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অভিভাবকদের আরোও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান ওসি আবদুর রশিদ

চাঁদপুর: চাঁদপুর শহরে বন্ধ হচ্ছে না কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। প্রায় প্রতিদিনই কাউকে না কাউকে তারা রক্তাক্ত জখম করছে। তবে পুলিশ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আটক করলেও কেউ মামলা না করায় সহজেই তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি ইতিপূর্বে কয়েকটি মামলারর মাধ্যমে কয়েকজনকে গাজীপুর শিশু সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন। কিশোর গ্যাং নির্মূলে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অভিভাবকদের আরোও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ।

জানা যায়, চাঁদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মেহেদী হাসান (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মেহেদী টেকনিক্যাল মাদ্রাসা রোড় এলাকার খান বাড়ি শাহাদাত খানের পুত্র। সে হাজীগঞ্জ মডেল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বর্তমানে সে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় পালপাড়া এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার আফতাব এর নেতৃত্বে কলেজ ছাত্র নায়েব কে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে পুলিশ আফতাবসহ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসলেও ভুক্তভোগীরা কোন মামলা না দেয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পূর্বে আফতাব অনেক যুবককে রক্তাক্ত জখম করেছে বলেও জানা যায়। তার বুকে ও শরীরে ১৪ টি সেলাই লাগে। বর্তমানে নায়েব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আহত মেহেদী জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুলের এক ছাত্রীর সাথে মাশরাফি নামে স্থানীয় এক কিশোর ইভটিজিং করে। ইভটিজিংয়ে বাঁধা দেয়ায় মাশরাফির সাথে তার তর্ক বাঁধে। এই ঘটনার ক্ষিপ্ত হয়ে মাশরাফি নামের ওই যুবক দলবল নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে হামলা করে তাকে তুলে আনতে যায়। এসময় তাদের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় দ্বন্দ্ব বাঁধে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২ টায় দিকে টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে মেহেদীকে একা পেয়ে মাশরাফির নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন কিশোর গ্যাং হামলা করে। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেহেদীর বুকে ও হাতে কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, কিশোর মেহেদীর বুকে ও হাতে ১২টি সেলাই করা হয়েছে। তবে বুকের ক্ষত স্থান থেকে রক্ত বন্ধ হওয়ায় বড় ধরনের বিপদ থেকে সে রক্ষা পেয়েছে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ভর্তি দেয়া হয়েছে।

আহত মেহেদীর বাবা শাহাদাত খান জানান, এই ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের মারামারির ঘটনার কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হলেও ভুক্তভোগীরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে চায় না। আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুলিশকে নিরব ভূমিকা পালন করতে হয়। কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোন ছাড় নেই। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অভিভাবকদের আরোও সচেতন হতে হবে।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম