চাঁদপুর: চাঁদপুর শহরের পালবাজার ও পুরানবাজারে ভারতীয় কাঁচা মরিচের দাম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৩০টাকা দরে। সেই কাঁচা মরিচই পালবাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে খুচরা বিক্রেতারা প্রতারনার মাধ্যমে বেশি দামে বিক্রি করে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ও পালবাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচ খুচরা বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় ও সর্বনিন্ম কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। এ অবস্থা বিরাজমান থাকায় ক্রেতা সাধারণ মারাত্মকভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে এবং মরিচ ক্রয় করে ঠকতে হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ।
শবিার (৩১আগষ্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের পালবাজার, পুরানবাজার, নতুনবাজার, বিপনীবাগ, শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে ও ফুটপাতে মরিচের দরদামের এমন চিত্র দেখা যায়।
দেখা যায়, এ সব বাজারের পাইকারী আড়তে প্রতি কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে। সেই মরিচই হাত বদল হয়ে দুইগুন ও তিনগুন বৃদ্ধি করে খুচরা বাজারে বিক্রেতা বিক্রি করে বেশী মুনাফা করে যাচ্ছে। এ অবস্থা দেখার যেন কেহ নেই।
সরোজমিনে কয়েকটি বাজার,শহরতলীর বাজার,ফুটপাতের ব্যানে করে বিক্রি করা ও উপজেলা পর্যায়ে হাট,বাজারে,মরিচ বিক্রেতাদের মরিচ বিক্রি করার খবর নিয়ে জানতে পারি। তাহচ্ছে, চাঁদপুর জেলা সদরের বড় বড় পাইকারী আড়তে এ ভারতীয় মরিচ এক শ্রেনীর ব্যবসায়ী ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে আমদানী করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে। সে আমদানী কারক রসুল খার ছেলে বাদশা ও হালিম পাটওয়ারীর ছেলে রিপনের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, ভারত থেকে প্রতি কেজি মরিচ শুল্ক ও ভ্যাট দিয়ে প্রতি কেজি মরিচ ৯০ টাকা ক্রয় মূল্য পড়ে। সে মরিচ বিক্রি হচ্ছে, ১২০ থেকে ১৩০টাকা দরে। আড়ৎদারের খরচ দিয়ে কেজি প্রতি ২০টাকা ৩০টাকা মুনাফা হয়ে থাকে।
চাঁদপুরে গত জুন-জুলাই এ দুই মাস চাঁদপুরের চর এলাকার ও বিভিন্ন স্থানের দেশীয় কাঁচা মরিচ এ এলাকার চাহিদা পূরনে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬০হতে ৭০টাকা পাইকারী দরে। সে কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০টাকা দরে। হঠাৎ বন্যা ও বৃস্টির পানির কারনে চর অঞ্চলের মরিচ নষ্ট হয়ে যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান,এর পরই বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা পূরনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ বেশী দামে আমদানী করায় ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ দিয়ে চাহিদা পূরনে বাজারে প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি হয় ১০০ টাকা থেকে ১১০টাকায়। সে মরিচ খুচরা বিক্রি করতে দেখা যায় ১৩০টাকা থেকে ১৫০টাকা দরে।
হঠাৎ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবিরাম বৃস্টিপাত ও বন্যার পানি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যায় ব্যাপক ভাবে। কয়েক দিন কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে ১৮০টাকা থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হলেও কয়েক দিন পূর্বে ব্যবসায়ীরা আমদানী কম অজুহাতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আবার দেশের কোথায়ও কোথায়ও ৮০০ টাকা থেকে ১হাজার ও ১ হাজার ২০০টাকা কাঁচা মরিচ বিক্রি খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হয়।
বৃষ্টি কিছুটা কমে যাওয়ায় ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ প্রচুর আমদানি হওয়ায় চাঁদপুরের পাইকারি আড়তে ১২০টাকা কাঁচা মরিচ বিক্রি হলেও চাঁদপুর শহরের কোর্টস্টেশন এলাকায়, পালবাজার খুচরা বাজারে, ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায়, পৌর সভার সামনে, কুমিল্লা রোড, কালি মন্দিরের সামনে, জোর পুকুর পাড়, নতুন বাজার, বিপনীবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানের ভ্যানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় খুচরা কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া শহরতলীর মৈশাদী, বাবুরহাট, শাহাতলী বাজার, মহামায়া বাজার, ইচলী, বাগড়াবাজার, ফরাক্কাবাদ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে।
এ ছাড়া চাঁদপুর সদরের আড়ৎ থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ ক্রয় করে সে কাঁচা মরিচ বিভিন্ন উপজেলায় নিয়ে বিক্রি করছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। বিশেষ করে উপজেলার বন্যাদূর্গত কচুয়া, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর এলাকায় ঘুরে জানা যায় এসব স্থানের ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর শহরের খুচরা কাঁচা মাল ব্যবসায়ি মজিবুর রহমান, মনির হোসেন ও মান্নান মিয়া জানান, বাজার দর সকালে, দুপুরে ও বিকেলে উঠা নামা করে। যে কারণে বেশি দরে কিনে বেশি দামে বিক্রি করে। আবার যারা কমে কিনতে পারে তারা কম দরে বিক্রি করে।
ফম/এমএমএ/