চাঁদপুর: মহান মুক্তিযুদ্ধের অনন্য সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধকালীন অধিনায়ক শহীদ মোঃ শহীদুল্যাহ জাবেদের ৫২তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আজকের এইদিনে তিনি চাঁদপুরের অদূরে ফরিদগঞ্জ থানার টুবগী ব্রিজের কাছে শহীদ হন।
কাঠের বাক্সে প্রথমবার তাঁকে রাত সাড়ে ৮টায় দক্ষিণ বালিথুবা গ্রামের সর্দার বাড়িতে সমাহিত করা হয়। ২৭ ডিসেম্বর সেখান থেকে তাঁর মরদেহ উত্তোলন করে লঞ্চযোগে চাঁদপুরে আনা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে জানাজার পর বাদ আসর চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার শহীদ জাবেদ সড়কস্থ পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হয়। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন দেখে গেলেও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বা বাঙালির স্বাধীনতা দেখে যেতে পারেননি।
শহীদ জাবেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর পরিবারবর্গ, শহীদ জাবেদ স্মৃতি মঞ্চ ও শহীদ জাবেদ মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সদস্যদের উদ্যোগে বাদ যোহর ও বাদ আসর মরহুমের নিজ বাড়ির আঙ্গিনাস্থ দারুস সালাম কোম্পানি জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে ।
মরহুমের ভাতিজা মুহাম্মদ মারনুছ মাহমুদ (তম্ময়) জানান, মুক্তিযুদ্ধে চাঁদপুরের রণাঙ্গনের প্রথম শহীদ মোঃ শহিদুল্লাহ জাবেদ চাচার বায়ান্নতম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে কবর জিয়ারত,কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছি।আমাদের বাড়ির মসজিদে বাদ যোহর এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আমার ছোট চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোঃ রফিকুল্লাহর জন্যেও দোয়া করা হবে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ হেদায়েত উল্যা এবং আলহাজ জুলেখা খাতুনের বড় ছেলে শহীদ জাবেদ ১৯৪৮ সালের ৩ জানুয়ারি বর্তমান শহীদ জাবেদ সড়কস্থ হেদায়েত-জুলেখা ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে ১ম শ্রেণিতে এমএসসি পাস করে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তিনি ভারতের দেরাদুন সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার সাথে প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেন।
তিনি এবং তাঁর অধীনস্থ মুক্তিযোদ্ধা দলের একের পর এক সাফল্যের বরমাল্য এসে পৌঁছতে লাগলো তাঁর গলে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দেশের জন্যে যুদ্ধ করতে গিয়ে ঘাতকের গুলিতে প্রাণ হারাতে হয় তাঁকে। চাঁদপুরবাসী বিনম্র শ্রদ্ধায় আজ স্মরণ করবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
ফম/এমএমএ/