আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লালমনিরহাটের প্রধান অর্থকরী ফসল ভুট্টা তোলা শুরু হবে। ফলন বাড়াতে এখন ভুট্টা খেতের গাছের পাতা ছেঁড়া জরুরি। এ জন্য মজুরি বাবদ অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে চর অঞ্চলের নিম্নআয়ের লোকজন বিনা পারিশ্রমিকে ভুট্টা পাতা ছেঁড়ার কাজ করছেন। পরে সেগুলো বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন। দাম কম হওয়ায় অনেকেই গো-খাদ্য হিসেবে তা কিনছেন। এতে একদিকে নিম্নআয়ের লোকজনের যেমন আয় বেড়েছে। অন্যদিকে গরুর খামারিরা কম দামে ভুট্টা পাতা কিনে পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন। সরেজমিন দেখা যায়, তিস্তার চর থেকে কেউ মাথায়, কেউবা ঘাড়ে ও কেউ সাইকেলে ভুট্টার পাতা নিয়ে বাজারে ঢুকছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার ভুল্লারহাট, ভোটমারী, হাতীবান্ধা উপজেলার ঘুণ্টি, পারুলিয়া, হাতীবান্ধাহাটসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভুট্টা পাতার হাট বসছে।
প্রতিটি ভুট্টা পাতার আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা। গরুর খামারিরা ৩০ থেকে ৫০টি আটি কিনছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী এলাকার আলাউদ্দিন (৫০) বলেন, ‘বর্তমানে কোনো কাজ-কাম নেই। তাই তিস্তার চরে গিয়ে ভুট্টার পাতা সংগ্রহ করে রেলস্টেশনে বিক্রি করতে আসছি। এতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হচ্ছে।’
হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব ডাউয়াবাড়ি আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অনন্ত বলে, সকালে স্কুলে যাই, বিকালে চরে গিয়ে পাতা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করি।
হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর বিছনদই গ্রামের কৃষক আজিজার মিয়া জানান, ভুট্টা চাষ করে আমরা লাভবান হচ্ছি। ভুট্টার গাছ, পাতা সব মূল্যবান। ভুট্টা বিক্রির পাশাপাশি পাতা বিক্রি করেও আমাদের আয় হচ্ছে।
কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, কৃষকরা ভুট্টা চাষে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে কৃষকরা ভুট্টার পাতা বিক্রি করছেন।
ফম/এমএমএ/