
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য সেবার মান বজায় রাখতে সকলকে খাদ্য গ্রহনের সচেতন হতে হবে। কেউ অসুস্থ হলে এটির দায়দায়িত্ব পরিবারের বহন করতে হয়। তাই আমাদের সকলের উচিত প্রত্যেকের জায়গা থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে খাদ্য অভ্যাস বজায় রাখা। দেশে উৎপাদন পর্যায় অনেক সমস্যা আছে। অনেক উৎপাদন পর্যায়ে রাসায়নিক দ্রব্য, কীট নাশক ব্যবহার করছে, যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
দীপু মনি বরেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। কৃষি উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। রাসায়নিক দ্রব্যের বিপরীতে বিভিন্ন জৈব উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা দ্রুত সময়ে উৎপাদিত পণ্যের পৌঁছে দিতে পারছে।
মন্ত্রী আলোও বলেন, সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে পারলেই আমরা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারবো। আমাদের ও উচিত খাদ্যে গ্রহনের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি করা। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে আমরা আইন মানার পাশাপাশি সচেতনা তৈরি করতে করবো। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অনেক উন্নত। এখন কেউ না খেয়ে থাকে না। নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। মানুষের এই অধিকার পূরণ করতে আমাদের সরকার ‘নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণয়ন করেছি এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ সংশি¬ষ্ট আইনও বিধিবিধান তৈরি করেছে। পাশাপাশি ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে অন দ্য স্পট স্ক্রিনিং, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং যারা খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির বিষয় মাথায় রেখে কৃষি সম্প্রসারণ নীতি করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সার, বীজ ও সেচের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের ওপর ব্যাপক জোর দিয়েছে এবং এতে করে খাদ্যের অপচয় এবং অনিরাপদ খাদ্যের ঝুঁকি হ্রাস পাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানে মৌলিক বিষয়গুলি অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি খাদ্যকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জাতির পিতা এ দেশে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিষ্ঠা ও কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলেন। যা আজ পর্যন্ত দেশের কৃষি উৎপাদন এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছে।
দীপু মনি বলেন, খাদ্যের উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে খাদ্যের নিরাপত্তা ও পুষ্টিমান বজায় রাখা জরুরি। যিনি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তার যেমন সচেতনতা প্রয়োজন, তেমনি যিনি ভোগ করবেন, তার ক্ষেত্রেও নিরাপত্তা প্রত্যয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এর সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম. পৌর মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির সুমন, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারী।
আরো বক্তব্য দেন, রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন পাটওয়ারী, ইব্রাহিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কাসেম খান, সমাজকল্যাণমন্ত্রীর চাঁদপুর প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন বাবু।
সভায় চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর পৌর সভা, হাইচর উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।