কিশোর গ্যাংয়ের হাতে যেভাবে হত্যার শিকার শাহিন

গ্রেপ্তার আসামী শান্ত দাস। ছবি: সংগ্রহীত।

চাঁদপুর: ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর শহরের ব্যাংক কলোনীর মো. ইব্রাহিম খালিল ওরফে শাহীন (১৭) কিশোর গ্যাংয়ের হাতে হত্যার শিকার হয় তার বর্ননা দিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (২৪ আগস্ট) চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, চাঁদপুর সদর মডেল থানা এলাকায় সংঘটিত চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ১নম্বর আসামী শান্ত দাস মামলা রুজু হওয়ার ৪০ মিনিটের মধ্যে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়।

ব্যাংক কলোনী এলাকার মৃত মো. স্বপন সরকারের স্ত্রী সাজেদা বেগম দম্পত্তির ছেলে মো. ইব্রাহিম খলিল প্রকাশ শাহীন (১৭)
রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করত। গত কয়েকদিন পূর্বে চাঁদপুর পৌরসভাস্থ ব্যাংক কলোনী খেলার মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করিয়া সাজেদা বেগম এর ছেলে ভিকটিম শাহীন এর সাথে শান্ত দাস (১৯), পিতা-অজয় চন্দ্র দাস, মাতা-কবিতা রানী দাস, সাং-ব্যাংক কলোনী, ছিদ্দিক মিয়ার টিন সেড বাসার ভাড়াটিয়া, মোঃ শামীম (১৯), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-ব্যাংক কলোনী, রাতিম (১৯), পিতা-মোঃ নাছির, সাং-বিষ্ণুদি, খান ভিলার গলির ভিতরে, মোঃ সামির (১৯), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-বিষ্ণুদি, ঢালী মসজিদের সামনে, সামি (১৯), পিতা-মোঃ মনির, মাতা-মনি বেগম, মোঃ সাকিল (২১), পিতা-মোঃ আলমগীর, মাতা-হালিমা বেগম, উভয় সাং-ব্যাংক কলোনী গাজী বাড়ী, সর্বথানা-চাঁদপুর সদর, জেলা-চাঁদপুর সহ আরো কয়েকজনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

ওই বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন ২৩ আগস্ট দিনগত রাত অনুমান ৮টার দিকে ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম খলিল প্রকাশ শাহীন বাসা থেকে বাসস্ট্যান্ড এর দিকে যাওয়ার সময় বিবাদীগণ ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম খলিল প্রকাশ শাহীন এর পথরোধ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারিভাবে কোপাইতে থাকে। ১নম্বর বিবাদী শান্ত দাস তাহার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে ভিকটিম শাহীনকে হত্যার উদ্দেশ্যে সজোরে কোপ মেরে উক্ত কোপ ভিকটিমের মাথার পিছনের অংশসহ বাম কানের নিচে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। উক্ত ঘটনা দেখে সাক্ষী মোঃ ফাহিম তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ২নং বিবাদী মোঃ শামীম তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে এবং ৩নং বিবাদী রাতিম তাহার হাতে থাকা ধারালো ছোরা দিয়ে সাক্ষী মোঃ ফাহিমকে এলোপাথারি কোপ মেরে তার শরিরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে।

অন্যান্য বিবাদীগণসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগন তাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা এলোপাথারি কোপাইয়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত জখম করে। তাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে বিবাদীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় সাজেদা বেগম এর ছেলে ও সাক্ষী মো. ফাহিমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সাজেদা বেগম এর ছেলে ভিকটিম মোঃ ইব্রাহিম খলিল প্রকাশ শাহীন কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। সাক্ষী মোঃ ফাহিম এর আঘাতের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রেফার্ড করেন।

উক্ত ঘটনার বিষয়ে সাজেদা বেগম(৩৫) বাদী হইয়া এজাহারনামীয় ৬ জন আসামী সহ অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন আসামীর বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার মামলা নং-২২/৫৮২, ২৪ আগস্ট। ধারা-৩৪১/৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।

মামলাটি রুজু হওয়ার পর চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর দিক নির্দেশনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শেখ মুহসীন আলম এর তত্ত্বাবধানে ২৪ আগস্ট এসআই মোঃ ফেরদৌস হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করিয়া মামলার এজাহারনামীয় ১নং আসামী শান্ত দাসকে চাঁদপুর সদর থানাধীন বাস টার্মিনাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করেন। পরবর্তীতে উক্ত আসামীকে যথাযথ পুলিশ প্রহরার মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ফম/এমএমএ/

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম