কবিতা:১
————–
জাগো বিশ্ব মুসলমান
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
ইসলামের আলো নিভাতে আজি
পশ্চিমা শক্তি জেগেছে।
বিশ্ব মুসলিম জাগরে জাগ
করিস না আর দেরী।
উপড়ে দিতে হবে সব ষড়যন্ত্র ওদের
করে দিতে হবে ধুলিসাৎ ওদের সব প্রাচীর।
জাগো বিশ্ব মুসলিম
জাগরে এবার জাগ।
মৃত্যুকে ভয় করিস না কভু
ভয় করিস না শত্রুর মেশিনগান।
বুক ফুলিয়ে কর জিহাদ
সঙ্গে আছে রহমান- রহীম।
কবিতা:২
————-
অমর একুশ
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
বাঙ্গালির অভিন্ন প্রতীক যদি থেকে থাকে,
তাইতো হচ্ছে এই অমর একুশ।
একুশের সামনে কৃতজ্ঞতায় মাথায় নোয়ায় না,
এমন বাঙ্গালি কোথাও নেই।
শহীদের রক্ত দানে সৃষ্টি হলো অমর একুশ,
যার ভ্রুণ থেকে জন্ম নিল মাতৃভাষা বাংলা।
মহান ২১শে’র কথা আমরা এখনো ভুলতে পারি না।।
বুকে রক্ত মাখা নিয়ে শহীদ হন,
সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত সহ অনেকে।
প্রভু হে ক্ষমা করে দাও আর করুণা তবে,
স্থান দাও তাদেরকে জান্নাতের এক প্রশস্থ ময়দানে।।
কবিতা:৩
—————-
শরৎ
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
বাংলার সংসার ষড়ঋতুর রঙ্গশালা,
এ দেশ ঋতু বৈচিত্রের লীলাভূমি।
বর্ষার বিষনতা অতিক্রম করে,
জ্যোৎস্না ও পুষ্প সুষমা নিয়ে আগমন করে শরৎ।
চাঁদের কিরণে পথ ঘাট অপরূপ,
সৌন্দর্য মন্ডিত হয়ে উঠে রাত্রিকালে।
প্রফাত শেফালী ফুলের,
সৌরভে ভরে উঠে শরৎ।
সুনীল গগনে মাঝে মাঝে,
সাদা মেঘ স্তূপীকৃত হয়ে বেড়ায় শরতের।
দিনের সোনালী রোদ্দুরের ঝিলিমিলি,
রাতের ধবধবে জ্যোৎস্নার ক্লান্তি নিয়ে শরৎকাল।
কবিতা:৪
—————
স্বাধীনতা তুমি
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
স্বাধীনতা তুমি অর্জিত হয়েছ,
লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে।
স্বাধীনতা তুমি অর্জিত হয়েছ,
লাখো মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে।
এখনো ভূলে নি ৭১’র ২৫ মার্চ
কালো রাতের স্মৃতি বাঙ্গালী জাতি।
হয়ত ভূলতে পারবে না আজীবন।।
নিরস্ত্র বাঙ্গালীর ওপর
জল্লাদ বাহিনীর বর্বরোচিত নগ্ন হামলা।
স্বাধীনতা তুমি অর্জিত হয়েছ,
রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে এই বাংলাদেশ।
স্বাধীন সর্বভৌমত্ব রাষ্ট্র হিসেবে,
স্থান পেয়েছ পৃথিবীর মানচিত্রে।
কবিতা:৫
————–
শীতের আগমন
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
আসছে শীত কাপঁছে দেশ
পৌষ ও মাঘ দু’মাস মিলেই শীতকাল।
এই এক বাংলার অনন্য ঋতু।।
কুয়াশায় আচ্ছন্ন শীতের সকাল
ঘুম ভাঙ্গলেও বিছানা ছেড়ে উঠতে চায়না মন!
জানালার ফাঁকে ঢুকে থাকা রোদের গন্ধ
যেনো এক অন্য অনুভূতি।
মাঠেঘাটে তাকালেই চোখে পড়ে
খেজুরগাছের আগায় ঝুলছে রসের হাড়ি।
সারি বেঁধে উড়ে চলা অতিথি পাখির দল।
অসহায় মানুষদের হাসি ফুঠাতে
সমাজকর্মীরা ছু্ঁটে বেড়ায় শীতবস্ত্র নিয়ে।
কবিতা:০৬
————–
প্রিয় জন্মভূমি
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
সবুজ সোনার বাংলাদেশ
আমার প্রিয় জন্মভূমি।
সবুজ মাঠে সোনার ফসল
চারদিকে ছড়াছড়ি।
ষড়ঋতু ছয়টি রুপে
সাজে সোনার মাঠ।
গাছে গাছে মধুর প্রাণে
কিচির মিচির ডাক।
নীল আকাশে উড়ে বেড়ায়
অতিথি পাখির দল!
হে প্রিয় জন্মভূমি
প্রাণের চেয়ে ভালবাসি তোমায়।
তোমার সুখে আমার সুখ
তোমার দুঃখে দুঃখী।
তোমায় নিয়ে দেখি আমি
রঙ্গিন স্বপ্নের মুখ।
কবিতা-০৭
—————
শীতের পোশাক
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
ভোরের ঘাসের বুকে শিশিরের টলমলে উপস্থিতি রাতের কুয়াশা হাড়কাঁপানো শীতের পূর্বাভাস।
শপিংমল-ফুটফাটে জমে উঠেছে
কত বাহারি রঙের শীতের পোশাক।
শীত নিবারণে মন চাই ফ্যাশনেবল পোশাক
শীতের পোশাক যেনো হয় রঙিন বৈচিত্র্যের ছোঁয়া।
দিন দিন বেড়েছে কদর শীতের চাদরের
শীতের সকালে চাদর ছাড়া হয় না শরীরের উষ্ণতা।
কবিতা:০৮
—————–
বসন্ত
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
প্রিয় বাংলাদেশ ছয়টি ঋতুর দেশ
ঋতুরাজা বসন্ত যেনো এক অনন্য অপরুপ।
শীত শেষেই ঋতুরাজা বসন্তের আগমন
ফাল্গুন-চৈত্র মিলেই বসন্তের ছোঁয়া।
বসন্ত মানেই গাছে গাছে নতুন সবুজ কচিপাতা
সবুজ কচিপাতা রূপ দেখলে জুড়িয়ে যায় মন।
বসন্ত মানেই গাছে গাছে নতুন ফুল
বাতাসে ফুলের গন্ধে চারদিকে ছড়াছড়ি।
মধু আহরণে আসা মৌমাছির
গুঞ্জন চারদিকে মুখরিত।
বসন্ত মানেই মধুর কন্ঠে কোকিলের ডাক
বসন্ত মানেই প্রকৃতির নতুন মুখ।
কবিতা:০৯
—————–
পথ শিশু
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
পথ শিশুদের নেই কোনো ঠিকানা
এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ায়।
কত শত ছেঁড়া কাপড় পরে
দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে।
থাকে সারাবেলা অনাহারে
শুধু খায় ডাস্টবিনের নষ্ট খাবার।
একমুঠো খাবার জোগাতে তবুও পারে না
টাকার জন্য পিছু ছাড়ে না।
রাত হলে শুয়ে পড়ে
রাস্তার ফুটপাত কিংবা স্টেশনের পাশে।
বুকে থাকে কত হাজারো স্বপ্ন কত আশা
সব শেষে কিছু হয় না গড়া।
কবিতা: ১০
—————–
প্রতিবাদ
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
কোথায় আজ মানবতা?
ইসলামের আলো মুছে দিতে,
ইসলামী অপশক্তি করেছে পণ।
কোথায় আজ মানবতা?
হাজারো মায়ের বুক খালি করছে বন্দুকের নল,
চারিদিকে বিশ্ব মুসলমানদের কান্নার আহাজারি।
জাতিসংঘের নেই কোনো উদ্যেগ,
শুধু করছে ইসলাম বিরোধীদের দালালি।
কোথায় আজ মানবতা?
নির্বিচারে নারী হত্যা-ধর্ষণ চলছে অবিরাম,
জালিমের হাতে রেহাই মিলছে না নিষ্পাপ শিশুও।
স্বার্থের জন্যে মুসলিম রাষ্ট্র হয় না ঐক্যবদ্ধ,
তাইতো মুসলিম রাষ্ট্রে ঘটছে যত অঘটন।
ও.আই.সি র নেই কোনো উদ্যেগ,
শুধু তা হা করে দেখছে।
আর কতকাল অপেক্ষায় থাকতে হবে?
খালেদ ও ওমরের মত বীর সৈনিকের আশায়।
আর কতকাল বিশ্ব মুসলমানদের রক্ত ঝরবে?
কখন ফিরে আসিবে সেই গৌরবময় সুদিন?
কবিতা: ১১
—————–
গ্রীষ্মের দৃশ্য
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
গ্রীষ্মকালে পড়ে গরম ,
যায় না ঘরে থাকা।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপে,
খাল-বিল, ডোবা-পুকুর যায় শুকিয়ে।
গ্রীষ্মকালে প্রকৃতির বুকে,
আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়।
সবার মনে ঝড় তুফান,
আনে কেবল ভয়।
চোখ জুড়ানো মন মাতানো,
কত বাহারি ফল-ফলাদি।
আম কুড়ানো গাছ তলাতে,
থাকে সবার নজর।
কাঁঠাল পাকে ঝাঁকে ঝাঁকে,
খেতে লাগে দারুণ মিষ্টি।
কবিতা:১২
——————
বর্ষার হাসি
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
বর্ষা নতুন সাজে সাজায় প্রকৃতির রং,
প্রকৃতিতে ফিরে আসে সজীবতা।
গ্রীষ্মের তাপে মাঠ-ঘাট ফেটে হয় চৌচির,
বর্ষায় ফিরে আসে সেই সজীবতা।
গাছে গাছে সবুজ পাতা,
আর নানা ফুলের সমারোহ।
জমিতে জমিতে ধান,
কৃষকের মুখে হাসির বান।
প্রকৃতি এক অপরূপ সৌন্দর্য গড়ে ওঠে,
আর মানব মনে বয়ে আনে আনন্দের জোয়ার।
কবিতা:১৩
—————
বর্ষার কষ্ট
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট থৈ থৈ,
বাইরে বের হওয়া কত কষ্ট?
প্রয়োজনের তাগিদে বাইরে যেতে হয় তবুও।
রিক্সা-সিএনজি চালকের কাছে,
যাত্রীদের গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া।
দিনমজুররা হয় ঘরে আবদ্ধ,
দুঃখের সীমা থাকে না তাদের।
গরীবের ভাঙা চালা দিয়ে,
পানি পড়ে ভেসে যায় ঘর।
বর্ষার দিনে কাঁচা তরকারির দাম বেড়ে,
মধ্যবিত্ত ও বস্তিবাসীদের বেড়ে যায় কষ্ট।
কবিতা:১৪
——————–
একদিনের বাঙালি
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
পহেলা বৈশাখে করিস তোরা,
সংস্কৃতি নামে অপসংস্কৃতি চর্চা।
পহেলা বৈশাখে সাজিস তোরা,
একদিনের বাঙালি।
পহেলা বৈশাখে পান্তা ইলিশ,
ছাড়া নেই কোনো কথা!
সারা বছরে খাস তোরা,
রেস্টুরেন্টে চায়নিজ কিংবা বিরানী!
পহেলা বৈশাখে বাঙালি কাপড়,
ছাড়া নেই কোনো কথা!
সারা বছর তো পড়িস তোরা,
ওয়েস্টার্ন শার্ট আর জিন্স প্যান্ট।
পহেলা বৈশাখে করিস তোরা,
চেতনার নামে যতসব বেহায়াপনা।
নিরীহ ভালো মানুষও দেবে,
তোদের গালি আর মুখে থুথু।
আসলেই তোরাই হলি,
একদিনের বাঙালি।
কবিতা:১৫
——————-
জ্যোৎস্নার রাত
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
জ্যোৎস্নার রাতে প্রকৃতি চন্দ্রে,
রূপালি আলোতে যায় ভেসে।
চোখ জুড়ানো মন মাতানো,
কত সৌন্দর্যের মনোরম ?
নীল আকাশে মিটমিটি তারা,
প্রকৃতির সৌন্দর্য করে মনোরম।
পূর্ণিমা চাঁদের আলো করে ঝলমল,
বৃক্ষরাজি মৃদু বাতাস নড়ে।
জ্যোৎস্না রাতে প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য,
ক্ষণিকের জন্য দূর করে দুঃখ-কষ্ট।
কবিতা:১৬
—————
কালবৈশাখী ঝড়
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
নীল আকাশের ঈশানকোণে কালো মেঘের ঢাকা,
আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়।
ঝড়ো হাওয়ার বিকট ঘুড়ুম ঘুড়ুম শব্দ,
তীব্র বাতাসে প্রকৃতিকে করে দেয় লন্ড-ভন্ড।
চারদিকে নেমে আসে জমাট বাঁধা অন্ধকার,
তীব্র বাতাসে নেমে আসে মেঘের গর্জন।
কর্মব্যস্তরা দৌড়ে আশ্রয় নেয় আপন নীড়ে,
গাঁয়ের কৃষক লাঙ্গল নিয়ে দৌড়ে ফিরে নিজ কুঠিরে।
পাখ-পাখিরা এদিক সেদিক করে ছোটাছুটি,
তাদের আশ্রয় নেয়ার নীড় খোঁজে।
ঝড়, ঝড় সর্বনাশা কালবৈশাখী ঝড়,
সাধের গোয়াল ঘরের চাল উড়িয়ে গেছে কত দূর?
পাখি নীড় হারায় আর আর্তনাদ শুনে তার ছানার।
কবিতা:১৭
——————
মুজিব মানে
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
মুজিব মানে
মৃত্যুঞ্জয়ী এক বীরের নাম।
মুজিব মানে
সাহসী রাজনৈতিক পাখি।
মুজিব মানে
এক বিপ্লবী কন্ঠস্বর।
মুজিব মানে
আপোষহীন এক বীর পুরুষ।
মুজিব মানে
গরীব দুঃখীর বন্ধু।
মুজিব মানে
রক্ত লেখা এক মানচিত্র।
মুজিব মানে
বাঙালি জাতির ত্রাণকর্তা।
মুজিব মানে
বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণা।
মুজিব মানে
হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
কবিতা: ১৮
———————-
রক্তাক্ত ১৫ই আগস্ট
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
বছর ঘুরে রক্তের কালিতে লেখা,
আবার ফিরে এসেছে সেই দিন-রাত।
স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের,
অশ্রুভেজা কলঙ্কময় সেই রাত।
রাতের অন্ধকার শেষে সুবহে সাদিকে,
কী নিষ্ঠুর, কী ভয়ঙ্কর- সেই নির্মম হত্যা।
কেঁদেছে আকাশে,কেঁদেছে বাতাস, কেঁদেছে প্রকৃতি
অভিশপ্ত শোকাবহ রক্তাক্ত ১৫ই আগস্ট।
ঘাতকদের মেশিনগানে শহীদ হন,
হাজারো শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু সহ অনেকেই।
ঘাতকদের মেশিনগান থেকে,
রেহায় মিলেনি ছোট্ট শিশু রাসেলও।
বাড়ির সিঁড়িতে অযত্ন অবহেলায় পড়েছিল,
জাতির জনক শেখ মুজিবের রক্তাক্ত মৃতদেহ।
স্বদেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসায় বেঁধেছিলেন,
কোনোদিন ছিন্ন হওয়ার নয় যে বন্ধন।
তাই আজোও মানুষ স্মরণ করে,
বীর বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে।
কবিতা:১৯
—————-
আল মাহমুদ মানে
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
আল মাহমুদ মানে
সৌজন্য ও শিষ্টাচারের ছোঁয়া।
আল মাহমুদ মানে
স্রষ্টার বিশ্বাসে আলোকিত চেতনার আবেগ।
আল মাহমুদ মানে
সোনালী কাবিনের কবি।
আল মাহমুদ মানে
বাংলা গল্পের এক আশ্চর্য সাহসী রূপকার।
আল মাহমুদ মানে
শব্দালংকারের নান্দনিকতা।
আল মাহমুদ মানে
কবিতার ছন্দের নতুনত্ব।
আল মাহমুদ মানে
মিথলজিক্যাল রোমান্টিক কবি ।
কবিতা প্রেরক:
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
প্রযত্নে: মাওলানা মন্জিল, চন্দনাইশ পৌরসভা, ওয়ার্ড নং ০২, পো: অফিস পূর্ব জোয়ারা (৪৩৮০), চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।