কচুয়া (চাঁদপুর) : সম্প্রতি মানসম্মত সেবার নজির গড়লো চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, গত সেপ্টেম্বর মাসে রেকর্ড সংখ্যক ৫০ জন মা নিরাপদ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এছাড়াও সিজার অপারেশান হয়েছে ৮জন মায়ের। এর আগে আগস্ট মাসে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা ছিল ৪৩জন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, সিনিয়র স্টাফ নার্স, মিডওয়াইফ এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীরা ২৪ ঘণ্টা নিরলসভাবে মাতৃস্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। তাদের আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব এবং জনগণের আস্থার ফলেই নরমাল ডেলিভারির এই সাফল্য এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিডওয়াইফ ও নার্সরা জানান, বর্তমানে অধিকাংশ মা হাসপাতালেই নরমাল ডেলিভারির জন্য আসছেন, যা গ্রামীণ এলাকায় অদক্ষ ধাত্রী দ্বারা বাড়িতে ডেলিভারি করানোর ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। সরকারী হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্তা বাড়ার ফলে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। সাধারন মানুষের ধারনা, হাসপাতাল মানেই সিজারিয়ান অপারেশান। এই ধারনা পাল্টে দিয়েছে কচুয়া সরকারী হাসপাতাল। নরমাল ডেলিভারির এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সাধারন মানুষ আর বে-সরকারী হাসপাতালমুখি হবেনা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা লিমা আক্তার বলেন, এখানকার ডাক্তার ও নার্সরা খুব যত্ন নেন। আমার সন্তানকে আমি স্বাভাবিকভাবে জন্ম দিতে পেরেছি, এজন্য আমি খুব-খুশি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন (গাইনী এন্ড অবঃ) ডাঃ অনিতা রাণী দেবনাথ বলেন, প্রসবোত্তর সময়ে প্রতিটি মা ও নবজাতকের প্রয়োজনীয় ঔষধ, পুষ্টি ও পরামর্শ এবং প্রসবোত্তর সেবা প্রদান করা হচ্ছে। গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সচেতনতামূলক পরামর্শ ও দক্ষ চিকিৎসক নার্সদের আন্তরিক সেবার কারণে নরমাল ডেলিভারির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এর ফলে সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রবণতা কমে এসেছে এবং স্বাভাবিক প্রসবে আগ্রহী হচ্ছেন মায়েরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এ সাফল্য প্রমাণ করে যে, জনগণ সরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আস্থা রাখছেন। আমরা আগামী দিনে আরও উন্নত সেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই রেকর্ড সংখ্যক নরমাল ডেলিভারি আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখে এবং আমাদের এক বড় অর্জন।
তিনি আরও জানান, এ ধারা অব্যাহত থাকলে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুহার আরও কমবে এবং “নিরাপদ মাতৃত্ব” বাস্তবায়নে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। “আমরা চাই প্রতিটি মা যেন নিরাপদ ও স্বাভাবিক উপায়ে সন্তান জন্ম দেন।
ফম/রাছেল/এমএমএ/

