কচুয়া (চাঁদপুর) : চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক স্থানে কৃষি জমি নষ্ট করে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের হিড়িক লেগে গেছে। এতে উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের ভূমিকা নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। বর্তমানে ড্রেজার মালিক ও বালু ব্যবসায়ীদের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বিপুল সংখ্যক ফসলি জমি।
কৃষি জমি নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে অনেক কৃষক। এছাড়াও দিন দিন ভূখন্ডের ভারসাম্য হুমকির মুখে রয়েছে। ড্রেজারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ও কৃষি জমি রক্ষায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা গেছে,উপজেলার সাচার ও বিতারা ইউনিয়নের বুজড়ীখোলা,রাগদৈল, দুর্গাপুর,বাইছারা ও বিতারার ঘুগড়াবিলে প্রায় ১২ টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। উপজেলার সবচেয়ে বড় ফসলি মাঠটি এখন অবৈধ ড্রেজার মেশিনের দখলের কারণে ফসলি মাঠটি সাগরের মতো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রতিহত ও অভিযান পরিচালনা করছে না বলে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পাশবর্তী পাথৈর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে মিয়াজী বাড়ির সাথে ফসলি মাঠ থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন প্রভাবশালী ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। একই ইউনিয়নের আটোমোড় বাজারের উত্তর-পশ্চিম পাশে ফসলী মাঠে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন একটি প্রভাবশালী মহল। ওই এলাকার কৃষকরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিক্রিয়া পাননি বলে ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান।
এছাড়াও কচুয়া উত্তর ও সদর দক্ষিণ ইউনিয়নের তেতৈয়া, দোয়াটি,ঘাগড়া ও রাজাপুর ফসলি মাঠে ৫টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। পালাখাল মডেল ইউনিয়নের কচুয়া-সাচার সড়কের পশ্চিম পাশে বাছাইয়া আলী আশ্রাফ ব্রিকফিল্ডর সাথে ফসলি জমি নষ্ট করে দীর্ঘদিন ধরে একটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধের দাবিতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না প্রশাসন।
তেতৈয়া গ্রামের একাধিক কৃষকরা জানান, তেতৈয়া,ঘাগড়া ও দোয়াটি ফসলী মাঠে কয়েক বছর যাবৎ ড্রেজার মেশিন বালু উত্তোলন করে আসছেন কয়েকটি চক্র। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক বার অভিযান পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে প্রভাবশালী লোকজনদের মাধ্যমে ম্যানেজ করে পুনরায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি অব্যাহত রয়েছে।
বজুরীখোলা ও সাচার কৃষকরা জানান, ভূমি অফিস, সাচার পুলিশ ফাঁড়ি ও কিছু সংবাদকর্মীদেরকে ম্যানেজ করে একাধিক স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বছরের পর বছর বালু উত্তোলন করে ঐতিহ্যবাহী ঘুগড়াবিল এখন নদীর মত পরিণতি হয়েছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবু নাছির বলেন, উপজেলায় কেউ ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ফম/এমএমএ/

