ইটের আঘাতে হত্যা করে অটোরিকশা চালক দুলালকে, প্রধান আসামী গ্রেফতার

চাঁদপুর: চাঁদপুর সদরে গুনরাজদী এলাকার অটোরিকশা চালক মো. দুলাল (৫৩) কে নির্জন এলাকায় নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন প্রধান আসামী মো. শরীফ মাঝি (২৪)। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুশিল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামী মো. শরীফ মাঝিকে সদরের ইচলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়।

তিনি বক্তব্যে বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর অটোরিকশা চালক দুলাল খুনের ঘটনায় পুলিশ সুপার চাঁদপুর এঁর প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তি এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনার পর হতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী মোঃ শরীফ মাঝিকে বুধবার সন্ধ্যায় সদরের বাগাদী ইউনিয়নের ইচলী এলাকার জনৈক ইয়াছিন এর বেকারী হতে গ্রেফতার করেন।

শরীফ মাঝি সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দিয়া গ্রামের রাজার হাট রাস্তার মাথা লতিফ মাঝি বাড়ীর হাবিবুর রহমান মাঝির ছেলে।

তিনি আরো বলেন, আসামীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসামীর বাড়ির পুকুর হতে চোরাইকৃত অটো রিকশার বিভিন্ন খন্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টার দিকে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে গিয়ে অটোরিকশা চালক দুলালকে বয়স্ক দেখে তার অটোরিকশা চুরি করার উদ্দেশ্যে রঘুনাথপুর জনকল্যাণ বাজারে যাওয়ার জন্য রিকশাটি ভাড়া করে। ওই বাজারে যাওয়ার পূর্বে মসজিদের পাশ হতে একটি ইট নিয়ে রিক্সায় উঠে। ভিকটিম দুলাল রিক্সা নিয়ে সামনের দিকে যেতে না চাইলে আসামী বলে, জনৈক ইয়াকুব আলী ব্যাপারীর বাড়ির সামনে গিয়ে নেমে যাবে। পরবর্তীতে ভিকটিম দুলাল তার অটো রিকশা নিয়ে ইয়াকুব আলীর বাড়ীর দিকে যেতে থাকে। ভিকটিম দুলাল ইয়াকুব আলীর বাড়ীর নির্জন। জায়গায় পৌঁছলে আসামী রিকশা থামাতে বলে। ভিকটিম দুলাল রিকশা থামানোর সাথে সাথে আসামী রিকশায় থাকা ইট’টি দিয়ে মাথার পিছনে ২ বার আঘাত করলে সে রিকশা হতে পড়ে যায়। তখন আসামী রিকশা হতে নেমে ভিকটিমের মাথায় আরো দুই বার আঘাত করে মৃত বলে মনে করে পার্শ্ববর্তী জলাশয়ে ফেলে যায়।

পরবর্তীতে আসামী ভিকটিমের অটো রিকশাটি নিয়ে জনকল্যাণ বাজার হয়ে তার বাড়িতে চলে যায়। পরবর্তীতে রিক্সাটি তার বাড়ির বাগানে রেখে বসত ঘরে চলে যায়। আসামী তার বসত ঘরে খাওয়া দাওয়া করে রিকশা খোলার যন্ত্রপাতি নিয়ে অটো রিক্সাটি আলাদা আলাদা করে খুলে ফেলে। আসামী মোঃ শরীফ মাঝি অটো রিকশার ৪টি ব্যাটারী বাগানের এক পাশে লুকিয়ে রাখে এবং রিকশার আলাদা করা অংশগুলো বাড়ীর সামনে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ। পূর্বক সকল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এদিকে হত্যার ঘটনায় অটোরিকশা চালক দুলালের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদপুর এর চাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়। ওই মামলার ভিত্তিতে মডেল থানা পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করেন।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম