ইঞ্জিনের গরম পানিতে শরীর জ্বলসেগেছে মেঘনা এক্সপ্রেস চালকের

চাঁদপুর : চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যান্ত্রিক ক্রটি ও ইঞ্জিন মাত্রারিক্ত হিট হওয়ায় গরম পানি ছিটকে গায়ে পড়ে চালক সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের সমস্ত শরীর জ্বলসে গেছে। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হওয়ায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়ে জরুরিভাবে কুমিল্লা প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনায় ট্রেনে থাকা সহস্রাধিক যাত্রীনিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় নারী, পুরুষ ও শিশুরা ট্রেনের মধ্যে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে ঘটনাটি ঘটলেও রেলওয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোয়েবুল শিকদার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

এদিকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ায় উত্তেজিত কিছু যাত্রী তাৎক্ষনিক ট্রেনের সামনে এসে বিক্ষোভ করে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এবং তারা ট্রেনের ভিতরে ভাংচুর করার চেষ্টা করে। পরে রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মুরাদ উল্লাহ বাহারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাৎক্ষনিক লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

অপরদিকে ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হওয়ার কারণে নতুন ইঞ্জিন এলএম-২৯১৬ লাকসাম থেকে আসার পর নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩ ঘন্টা বিলম্বে প্রায় সকাল ৮টার দিকে চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

চাঁদপুর স্টেশন সূত্রে জানাগেছে, আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিনের মত চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ছাড়ার পূর্বেই চাঁদপুর স্টেশনে ট্রেনটি দাড়ানো অবস্থায় ইঞ্জিন (এল এম-২৯২৪) মাত্রারিক্ত গরম হয়ে পড়ে। এতে করে চালক বুঝতে পেরে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা না করে স্টেশনে অবস্থান করে। এ সময় ট্রেনের প্রধান লোকো মাস্টার (চালক) কামাল হোসেন ও সহকারী লোকো মোটিভ (সহকারী চালক) সাঈদ মোহাম্মদ তাহের ইঞ্জিনটিকে রক্ষা কল্পে বাহির থেকে পানি এনে ইঞ্জিনে মারতে থাকেন।

ওই সময় ইঞ্জিনের প্রচন্ড গরম পানি ছিটকে এসে সহকারী লোকো মোটিভ (সহকারী চালক) সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের শরীরে গিয়ে পড়ে তার সমস্ত শরীর জ্বলসে গিয়ে সে গুরুত্বর আহত হয়ে পড়েন। পরে প্রধান চালক কামাল হোসেন,  রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা ও এলাকাবাসীর সহায়তায় ট্রেনের ইঞ্জিনে বেশ কিছু সময় নিয়ে পানি দিয়ে ঠান্ডা করেন। তখন থেকেই ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে পড়ে।

চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার শোয়েবুল শিকদার জানান, তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় ট্রাফিক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নির্দেশে লাকসাম থেকে একটি নতুন ইঞ্জিন এনে প্রায় ৩ঘন্টা বিলম্বে ট্রেনটি চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে চাঁদপুর ত্যাগ করে। এ সময় বিকল ইঞ্জিনটিও ট্রেনের পিছনে আটকে লাকসাম নিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, যান্ত্রিক ক্রটির কারণে ট্রেনটির ইঞ্জিন মাত্রারিক্ত গরম হওয়ায় পানি ছিটকে এসে চালক সাঈদ মোহাম্মদ তাহেরের সমস্ত শরীর জ্বলসে যায়। তাকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লায় প্রেরন করা হয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিনটি বিকল হওয়ায় প্রায় ৩ ঘন্টা বিলম্বে মেঘনা ট্রেনটি চাঁদপুর ত্যাগ করে চট্রগ্রাম যায়। যাত্রীদের কোন ক্ষতি হয়নি। তারা কিছু সময়ের জন্য দুর্ভোগে পড়েন। ট্রেনের টিকিট করা প্রায় ৮শতাধিক যাত্রী ও অতিরিক্তসহ সস্রাধিক যাত্রী ছিল।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম