
ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আবারও আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করছে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলাবাসী।
স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে ঢাকায় প্রস্তুতিমূলক সভা ও আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহাকে আহ্বায়ক ও শিল্পকলা একাডেমির উপ-পরিচালক শাহাদৎ হোসেন নিপুকে সদস্য সচিব করে এ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন- কবি আসলাম সানী, শাহজালাল ফিরোজ ও মাহজাবীন রেজা চৌধুরী।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার সেগুনবাগিচার ৩২,তোপখানা রোডের চট্টগ্রাম ভবন মিলনায়তনে এ প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়।
প্রস্তুতিমূলক এ সভায় অংশ নেয় ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি, আগরতলা’র সভাপতি শিক্ষাবিদ দেবব্রত দেব রায়ের নেতৃত্বে ১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল।
এ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন- আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থের সম্পাদক ড. দেবব্রত দেব রায়, প্রধান সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ড. মুজাহিদ রহমান, লেখক নিয়তি রায় বর্মন, ড. দিলীপ সরকার, ড. বীথিকা চৌধুরী, কবি মৌসুমী কর, নন্দিতা ভট্টাচার্য, গল্পকার বিল্লাল হোসেন, কণ্ঠশিল্পী স্বর্ণিমা রায়, কবি জহর দেবনাথ, সমাজ সেবক বিশ্বজিত রায় চৌধুরী, শিবানী ভট্টাচার্য ও প্রিয়তিশা দেব রায়।
গঠিত আহ্বায়ক কমিটি আলোচনা করে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ও কয়েকটি উপকমিটি গঠন করবে বলে প্রস্তুতি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় কবি অসীম সাহার সভাপতিত্বে ও শাহাদৎ নিপুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের অন্যতম উদ্যোক্তা, আগরতলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. দেবব্রত রায়, আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থের প্রধান সম্পাদক ড. মুজাহিদ রহমান, কবি আসলাম সানী, শাহজালাল ফিরোজ , ড. বীথিকা চৌধুরী, লেখক নিয়তি রায় বর্মন, সমাজ সেবক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাদিদ রেজা চৌধুরী, লেখক খোরশেদ আলম বিপ্লব ও ডি কে সৈকত প্রমুখ।
এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কবি অঞ্জনা সাহা, কবি মাহবুবা লাকি, বাপ্পী রহমান, রংপুরের পীরগঞ্জের সুলতান আহমেদ সোনা, টাঙ্গাইলের মনোজ কান্তি সরকার, সিরাজগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক মান্নান রায়হান, কলকাতার মলয় মুখোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী মহাদেব ঘোষ, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাদা মহিউদ্দিন, নড়াইলের সৈয়দ খাইরুল আলম, কথা সাহিত্যিক সিরাজুল ইসলাম মুনির, অধ্যাপক রোকসানা আক্তার সাথী, অধ্যাপক জাকির হোসেন জামাল, পটুয়াখালীর মাসুদ আলম বাবুল, ড. সবুজ শামীম আহসান, খাগড়াছড়ির শাহনাজ সুলতানা, আবৃত্তিশিল্পী রুপশ্রী চক্রবর্তী, কবি রোকেয়া ইসলাম ও নায়েম পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম উজ্জামান প্রমুখ। এ সভায় শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. দেবব্রত দেব রায় বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আমরা আগরতলাবাসী আবারও আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করতে যাচ্ছি। গ্রন্থটি তিন শতাধিক লেখকের লেখায় সমৃদ্ধ। কলকাতার প্রেস থেকে এ স্মারকগ্রন্থটি ছাপা হবে। এ গ্রন্থটি ছাপাতে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটির সদস্যদের আর্থিক সহায়তায় এটা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে। এখানে বাংলাদেশ বা ত্রিপুরা সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো অনুদান নিচ্ছি না। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসেই আমাদের এ উদ্যোগ।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর আমরা প্রথম আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করি। সেটির মোড়ক উন্মোচন হয়েছিল ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে। ওই সময় কলকাতা, দিল্লি, শিলচর ও ত্রিপুরাতেও গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন উৎসব করা হয়। এবারও দ্বিতীয় বারের মতো আমরা প্রথমে ঢাকায় মোড়ক উন্মোচন করব। তারপর কলকাতা, দিল্লি ও আগরতলায় এ উৎসব উদযাপন করা হবে।
ড. দেবব্রত আরও বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের এক অভিন্ন হৃদয় এবং এক অভিন্ন অত্মার সম্পর্ক রয়েছে। আমরা দুই দেশে বাস করলেও একই কৃষ্টি, সংস্কৃতি, পরম্পরা, একই ইতিহাস এবং একই রকম অনুভব হৃদয়ে ধারণ করি। আমাদের চিন্তন, আমাদের মননে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করি। সবচেয়ে বড় কথা আমরা একই ভাষায় কথা বলি, একই ভাষায় চিন্তা করি, আমরা গর্বিত যে বাংলা আমাদের মাতৃভাষা।
সভায় কবি অসীম সাহা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মরণে ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আগরতলাবাসী যে উদ্যোগ নিয়েছে এ জন্য তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ঢাকায় আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনে সার্বিক সহযোগিতা আমরা করব।
কবি আসলাম সানী বলেন, আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন শুধু ঢাকায় নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে এ উৎসবের আয়োজন করা হবে। আমরা আগরতলাবাসীর মহান এ কর্মযজ্ঞের সঙ্গে আছি।
২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রয়াত রেজাউল হক চৌধুরীর ছেলে সাদিদ রেজা চৌধুরী বলেন, স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনে আমার বাবা যেভাবে আপনার পাশে ছিলেন, আমিও আপনার পাশে আছি। আপনারা আমার বাবা ও আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
আগরতলা থেকে আসা প্রতিনিধি দলটি শনিবার (১৬ এপ্রিল) ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর’পরিদর্শন করেছে। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় প্রতিনিধি দলটি।
ফম/এমএমএ/