।। এস ডি সুব্রত।। নারী ও পুরুষের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি” —– এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৯ নভেম্বর এবছর পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারও সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে দিনটি। সমাজও সংসারে এবং পরিবারে পুরুষের অবদান এবং তাদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার লক্ষ্যে আজ এ দিনটি পালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ‘নারী দিবস’ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানলেও পুরুষ দিবস সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। অনেকেই জানেননা নারী দিবসের মতো আছে ‘পুরুষ দিবস’ । বিভিন্ন দেশে এই দিনের উল্লেখযোগ্য আয়োজনে থাকে সেমিনার, বির্তকসহ নানা আয়োজন । অনেক দেশেই বহুবছর আগে থেকেই পালিত হয়ে আসছে ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’। পুরুষ দিবস পুরুষদের অবদান সম্পর্কে সবাইকে জানোনোর একটা প্রচেষ্টা মাত্র। নারী পুরুষ উভয়ের মিলিত প্রচেষ্টায় এ সংসার , রাষ্ট্র একটা সুন্দর আগামীর পথে এগিয়ে যায়।
প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিনটি উদ্যাপন করা হয়ে থাকে। ইউনেস্কোর উইমেন এন্ড কালচার অব পিসের পরিচালক ইনিবর্গ ব্রেইনিস বলেন, ‘এটা একটা দারুণ আইডিয়া। এটা লৈঙ্গিক ভারসাম্য আনবে।’ ১৯৯৪ সালে প্রথমবার পুরুষ দিবস পালনের প্রস্তাব করা হয়। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে। এই দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে। রাশিয়া, ইউক্রেনসহ তখনকার সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এই দিবসটি পালন করা হতো। ১৯৬৮ সালে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস নিজের লেখায় এ দিবসটি পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ১৯৯৯ সালে ত্রিনিদাদ এবং টোবাগোতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ড. জেরোমে টিলুকসিং তার পিতার জন্মবার্ষিকী স্মরণে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উদযাপন করেন।
পুরুষের উদ্বেগের বিষয়কে সামনে আনতে সবাইকে উৎসাহিত করেন তিনি। পরিবারের এবং রাষ্ট্রে পুরুষের অবদানকে তুলে ধরতে এদিনটি উদযাপিত হয় ।পুরুষের সামাজিক, মানসিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক সুস্থতার যত্ন নেওয়ার বিষয়টি এবং নানা ক্ষেত্রে তাদের বৈষম্যের শিকার হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয় এদিন। একটি উন্নত, আধুনিক ও নিরাপদ বিশ্ব তৈরির লক্ষ্যেও পালিত হয় দিনটি।
তবে একথা বলতে দ্বিধা নেই যে , পুরুষের প্রায় সকল সাফল্যের পেছনে রয়েছে নারীর অবদান। নারী কখনো বোন , কখনো মা , কখনো সহধর্মিণী , কখনো সহযোদ্ধা । নারী পুরুষ উভয় উভয়কে শ্রদ্ধা ,সম্মান দিলে , ভালবাসলে এ পৃথিবী হয়ে উঠবে সুখের অমরাবতী । নারী পুরুষের মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুখী ও সুন্দর পৃথিবীর কামনা আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসে ।
লেখক: কবি ও প্রাবন্ধিক , সুনামগঞ্জ।
০১৭১৬৭৩৮৬৮৮ ।