চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তরে ইসলামাবাদ ইউনিয়নে নন্দলালপুর বাজারে নাছির উদ্দিনের চা দোকানের পিছনে একটি ঘরে তার নেতৃত্বে অসামাজিক কার্যকলাপে বাধা প্রদান করায় এক যুবকের উপর অতর্কিত হমলার ঘটনা ঘটে। এতে রাসেল নামের ওই যুবক গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় আহত রাসেল বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বিবাদী করা হয়েছে, নন্দলালপুর গ্রামের মোঃ দুখু মিয়ার ছেলে মোঃ নাছির উদ্দিন (৪০), মোঃ দুখু মিয়া (৬০) ও বিজয় চন্দ্র শীল (৩০) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে।
অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, নন্দলালপুর বাজারে ১নং সাক্ষী বোরহান উদ্দিনের অটোগাড়ীর গ্যারেজে কাজ করি। ১নং বিবাদী অত্র বাজারে চা দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছে। ১নং বিবাদী প্রাই সময় তার দোকানের পিছনে অন্য একটি পরিতক্ত দোকানে অজ্ঞাতনামা নারী নিয়া অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। ১নং বিবাদীর এই ধরনের কার্যকলাপ আমাদের দোকানের সিসি ফুটেজে ধারণ হয়ে যায়, আমি উক্ত বিষয়ে ১নং বিবাদীকে বহুবার বাধা নিষেধ করি। ১নং বিবাদী আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে প্রায় সময় হুমকি ধামকি প্রদান করে আসতে থাকার এক পর্যায় গত ২৭ নভেম্বর দুপুর ২.১৫ ঘটিকার সময় বাজারে জনসাধারন না থাকাবস্থায় বর্ণিত বিবাদীরা সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ১নং বিবাদীর দোকানের পার্শ্বে লাঠি সোটা, লোহার রড, জিআই পাইপ ইত্যাদি দেশিয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওৎ পেতে থাকে। বর্নিত ১নং বিবাদী আমাকে দেখে শার্টে কলার ধরিয়া কিলঘুষি মারতে মারতে তার দোকানের পার্শ্বে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সকল বিবাদীরা আমাকে এলোপাথারী ভাবে লাঠি সোটা, লোহার রডদ্বারা মারধর করে। আমি মাটিতে পড়ে থাকাবস্থায় ১নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা জিআই পাইপদ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ করিয়া বারি মারলে, আমি একটু পাশ কাটিলে, উক্ত বারি আমার ডান কাধে পরে আমার ভান কাধে গুরুতর হাড় ভাঙ্গা জখম প্রাপ্ত হই। ২নং এবং ৩নং বিবাদীরা লাঠি সোটাদ্বারা আমাকে এলোপাথারী ভাবে পিটাইয়া আমার হাতে, পায়ে, পিঠে, কোমড়ে সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে নীলাফুলা জখম করে। ২নং বিবাদী আমাকে শ্বাসরুদ্ধ করিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাতদ্বারা আমার গলায় চাঁপ দিয়া ধরে। আমি ধস্তা ধস্তি করে কোন উপায়ে ২নং বিবাদীর দুই হাত আমার গলা হইতে ছুটাইতে সক্ষম হই। ৩নং বিবাদী আমার প্যান্টের পকেটে থাকা নগদ ব্যবসার ৩৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমার ডাক চিৎকার শুনে আশ-পাশ হইতে বর্নিত সাক্ষীগন সহ অন্যান্য লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে আসিয়া বিবাদীদের কবল হইতে আমাকে প্রানে রক্ষা করে। উক্ত বিবাদীরা আমাকে সময় সুযোগমত খুন করিয়া লাশ গুম করিবে বলে প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করিয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়। আমি বর্নিত সাক্ষীগন সহ অন্যান্য লোকজনদের সহায়তায় মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে উন্নতর চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
অভিযোগের সাক্ষী বোরহান উদ্দিন বলেন, আমার দোকানে রাসেল কাজ করে। আমার দোকানের সিসি ক্যামেরায় নাছিরের অসামাজিক কার্যকলাপ ধরা পড়ে। এই সূত্র ধরে আমাদের দোকানের ষ্টাফ রাসেলকে একা পেয়ে বেধর মারপিট করে। তাকে হুমকি ধামকি দেয় এবং আমাকেও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমাদেরকে মেরে উল্টা রাজনৈতিক ইস্যু বলে আমাদেরকে ফাঁসাতে চায়। নৌকার প্রার্থী ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের উপর অত্যাচার শুরু করেছে।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে নাছির উদ্দিন পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাঁধা প্রদান করায় তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এবং বোরহান উদ্দিন, রাসেল সহ আরো কয়েকজন তাকে মারধর করে।
ফম/এমএমএ/আরাফাত/