
চাঁদপুর : আকর্ষনীয় ও সব সুবিধা থাকা সত্বেও সরকারি উদ্যাগের অভাবে, অবহেলা , অযত্নে এবং পরিত্যাক্ত অবস্থায় দুই দশক যাবত পড়ে আছে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল গ্রামে অবস্থিত সরকার ঘোষিত ‘ষাটনল র্পযটন কেন্দ্রটি ।’
মেঘনা পাড়ে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এ পর্যটন কেন্দ্রে গেলে যে কেউ আনন্দের পরিবর্বতে হতবাক ও হতাশ হয়ে ফিরে আসবেন। নদীরপাড়ে বিশাল জায়গায় অবস্থিত এ কেন্দ্রে নেই কোন গাছপালা । আছে কেবল ময়লা আর্বজনায় ভরপুর পুরো খোলা সবুজ চত্তর জুড়ে । বছরের পর বছর স্থানীয়রা গরু ছাগল মহিষ চরাচ্ছেন। এখান থেকে মাটি কেটে্ও নিয়ে যাচ্ছেন দুষ্ট লোকজন। নেই কোন ছায়াযুক্ত গাছপালা । মাঝখানে আছে একটি বটগাছ , সেটার কাছে কেহ ভয়ে যায় না । কারন এটাতে প্রচুর শিকড় । কেন্দ্রটির মাঝখানে একটি মাঝারি ধরনের অপরিস্কার ঘর রয়েছে । এখানে আগত কিছু যুবক ভ্রমন পীপাসুরা বসে গপ্প গুজারি করেন ও আড্ডা মারেন ঘন্টার পর ঘন্টা । তবে ঘরের পুরো মেঝেটি ময়লা আর্বজনায় আচ্ছাদিত । পাশে আরেকটি ছোট ঘরও (রান্নাঘর) রয়েছে । সেটাতে গরু ছাগল বিশ্রাম নেয় ও মলমুত্র ত্যাগ করে থাকে । আবর্জনার স্তূপ বা জ্বালানীও রাখেন স্থানীয়রা। ২টি ঘরই মাদকাসক্তদের আস্তানা।
দুই যুগ আগে সরকার সুন্দর ও মনোরম পরিবেশের কারনে এস্থানটিকে র্পযটন কেন্দ্র ঘোষনা করলেও আজো কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। নেই কোন বাউন্ডারি বা সাইনবোর্ডও । ষাটণল লঞ্চঘাট সংলগ্ন হওয়ায় ছুটির দিনগুলোতে শতশত পিকনিকারগন বনভোজন করার জন্য ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, সোনারগাও ও দূর দুরান্ত থেকে এখানে আসেন লঞ্চ ও ট্রলার যোগে । সকালে এসে বিকেলেই ফিরে যেতে পারে অনায়াসে ।কারন ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁও, দাউদকান্দির কাছে –মাত্র এক/দেড় ঘন্টার ভ্রমন ।কিন্তু এখানে বনভোজনের কোন রকমের ন্যুনতম সুযোগ সুবিধা না থাকায় কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করে লঞ্চ ও ট্রলার যোগে আসা লোকজন হতাশ হয়ে ফিরে যান বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন এ প্রতিনিধিকে। সবশেষে, আগত লোকজন ছবি তুলে, গপ্প ও আড্ডা মেরে লঞ্চে/ ট্রলারে বসেই পিকনিকের খাবার সেরে নেন।
ঘুরে ঘুরে দেখা গেলো-এখানটায় নেই কোন ভালো স্পট , রান্নার স্পট।বা ফুলের বাগান বা গাছের নীচে বসে সবাই গোলাকারভাবে বসে খাবারের স্পট । পুরুষ ও মহিলাদের জন্য নেই কোন বসার জায়গা, নেই ওয়াশরুম, নেই কোন বিশুদ্ব পানির ব্যবস্থা , নেই কোন ন্যুনতম সুযোগ সুবিধা।
হঠাৎ বৃস্টি আসলে কোন শেলটার বা বড় ছাতার ব্যবস্থাও নেই। অদুরে আছে ছোট্ট একটি মসজিদ।সেখানেও নেই ভালো ওয়াশরুম। নেই কোন দোকান পাটও । স্থানীয় লোকজন বললেন, আমরা র্পযটন কেন্দ্রের উন্নয়ন চাই । এটি চালু হলে এলাকাটি আলোকিত হয়ে যাবে অল্প সময়েই।
এমনটাই জানান, এলাকার প্রবীণজন ওহিদুল্লাহ মিয়া (৭৭), শান্ত মোল্লা, মোবারক মিয়া (ব্যবসায়ী), খোকন সরকার, তার ভাই জাফর সরকার,(৪৫) এলাকার গৃহিনী শাহানারা বেগম(৩৫) এবং মোহনপুর স্কুল ও কলেজ থেকে ঘুরতে আসা সারওয়ার হোসেন (১৩) এবং তার সাথের একঝাক বন্ধুরা ।

বেশ ক’মাস আগে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড শামসুল আলম স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম রুহুল ও ইউএনও ও গণ্যমান্য ব্যক্তির্বগসহ এলাকাটি দেখে বেশ সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি পর্যটন এলাকাটির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাসও দেন। তিনি সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের কিংবা প্রাইভেট কোম্পানীকেও এগিয়ে আসার আহবান জানান যেনো এটি দেশের অন্যতম সুন্দর ও আর্কষনীয় একটি র্পযটন কেন্দ্রে রুপ নেয় ।
সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. আল-ইমরান খান বলেন, কিছুদিন আগে আমরা পাঁচ একর জমি ষাটনল র্পযটন কেন্দ্রের জন্য সরকারি বন্দোবস্ত/লীজ দেয়ার লক্ষ্যে র্উধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি’।
উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল হাসান বলেন, পর্যটন মন্ত্রনালয় থেকে একটি টীম কয়েক সপ্তাহ আগে এখানে এসেছিলো । তারা এলাকাটি ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। তারা র্পযটন কেন্দ্রের উন্নয়নে কাজ করছেন। আমরাও কাজ করছি ।
এলাকাবাসীর দাবি এ পর্যটন কেন্দ্রটি চালু হলে এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রভূত উন্নয়ন হবে ।অনেক দোকানপাট ও মার্কেট হবে। সাধারন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে।জায়গা জমির দাম বাড়বে।নগরায়নরে ছোয়া লাগবে। তারা এটিকে বংগবন্ধু পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নামকরনেরও জোর আহবান জানান এবং এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
ফম/এমএমএ/