অবশেষে ধরা হাসপাতালের খাবারসহ নানি-নাতি

চাঁদপুর :  চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের খাবার চুরি হওয়ার কথা মুখে মুখে থাকলেও ধরা পড়নি চোর চক্র। জেলা ও আশপাশের জেলার অনেক রোগীই চিকিৎসা নিতে আসেন এই হাসপাতালে। আর ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের খাবার পরিবেশন করা হয় ঠিকাদারের মাধ্যমে। রোগীদের প্রতিদিনের খাবার থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন নিকট হাতেনাতে ধরা পড়ল হাসপাতালের রান্না ঘরে কাজে নিয়োজিত রেজিয়া বেগম ও তার নাতি সাকিল।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে হাসপাতালের পূর্ব দিকের গেটে মাছ, চাল ও আলু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীদের হাতে আটক হয়। এ সময় নাতি সাকিলকে স্থানীয় উত্তেজিত লোকজন মারধর করে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে হাসপাতালের পূর্বদিকের গেট দিয়ে রান্নাঘর থেকে বাবুর্চি রেজিয়া বেগমের নাতি সাকিলের মাধ্যমে বস্তায় করে প্রায় ১০ কেজি ওজনের কাটা রুই মাছ, চাল, প্রায় ১০ কেজি আলু ও পাউরুটিসহ রোগীদের বিভিন্ন খাবার সামগ্রী অন্যত্র বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা বাবু, এ্যাম্বুলেস চালক কাউসার ও রাজ্জাক হাতে নাতে ধরে ফেলেন। পরে খাবার সামগ্রীসহ তাদেরকে আটকিয়ে হাসপাতাল কৃর্তপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।

নানি নাতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা বলেন, রোগীদের খাবার চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করার সাথে ঠিকাদাররাও জড়িত রয়েছেন।

এমন ঘটনার বিষয়ে ঠিকাদার সঞ্জিত পোদ্দারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত রোগীদেরকে ভালো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। হাসপাতালের রোগীরা যাতে ভালো এবং পরিপূর্ণ খাবার পায় সেটা আমরাও চাই। কিন্তু তাদের এমন ঘটনার কারণে হয়তো রোগীরা সঠিক খাবার থেকে বঞ্চিত হয়। যার কারনে আমাদের ঠিকাদারদের অনেক বদনাম রটে। আমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের এমন খাবার চুরি করার অভিযোগ পেয়েছি। আমি তাদেরকে অনেক সতর্ক করেছি। তাদের এমন ঘটনার জন্য আমিও চাই তাদের কঠিন শাস্তি হোক।

এদিকে রোগীদের খাবার চুরির এমন ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহরিন সঙ্গীয়ফোর্স নিয়ে হাসপাতাল থেকে ওই যুবক সাকিলকে পুলিশ হেফাজতে থানায় নিয়ে যান।

ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বাবু, এ্যাম্বুলেন্স চালক কাউসার ও রাজ্জাক জানান, আমরা জেনেছি তারা প্রায় প্রতিদিন এভাবে রোগীদের খাবারে অনিয়ম করে হাসপাতাল থেকে মাছ, মাংস, চাল, ডালসহ বিভিন্ন খাবার সামগ্রী চুরি করে নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ও হোটেলে বিক্রি করে থাকেন। তাই আমরা আজকে তাদেরকে দীর্ঘক্ষণ পাহারা দিয়ে এগুলো চুরি করে অটোরিকশায় উঠানোর সময় হাতেনাতে আটক করি।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার আসিবুল আহসান চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেব। এমনকি ভবিষ্যতে যেনো আর এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য তাদের কাউকেই রান্নার ঘরে চাকরিতে রাখবোনা। তাদের সবাইকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম